দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৯ জুন ২০১৫: বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ প্রস্তাবিত বাজেটকে বিশাল ঘাটতি বাজেট উল্লেখ করে বলেছেন, বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অসাধ্য হবে।তিনি বলেন, বিশালাকারের বাজেট হলেও এতে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন অত্যাবশকীয় খাতে বরাদ্দ কম দেয়া হয়েছে।তিনি সোমবার সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন।রওশন এরশাদ দেশের সকল জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করেন। তিনি বলেন, দেশের গরীব জনগণকে চিকিৎসা সেবার আওতায় আনতে হলে এত কম বরাদ্দ দিয়ে সম্ভব নয়। এখাতে তিনি ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন। এছাড়া তিনি শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দেরও প্রস্তাব করেন। তিনি বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করারও আহ্বান জানান।
তিনি দেশের অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতেও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এখাতের উন্নয়ন না হলে দেশে বিনিয়োগ আসবে না। আর কর্মসংস্থানও হবে না। ফলে এখাতেও বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিতে হবে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ, জ্বালানি খাতেও বরাদ্দ দিতে হবে। রামপাল এবং মহেষখালীর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষয়ে পরিবেশবাদীদের বিরোধিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় যাতে পরিবেশের কোন বিপর্যয় না ঘটে, সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। তিনি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনেও সতর্কতা অবলম্বন করারও আহ্বান জানান।তিনি বলেন, দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্থবিরতা বিরাজ করছে। ব্যাংকিং খাতেও অস্থিরতা চলছে। আর রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তো রয়েছেই। এ অবস্থায় বাজেটে প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে, তা কিভাবে অর্জিত হবে তার কোন দিক-নির্দেশনা নেই। তিনি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করেন।বিরোধীদলীয় নেতা দেশের প্রধান রফতানি খাত পোশাক শিল্পে উৎসে কর প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এ খাতের মাধ্যমেই দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির প্রাণ কৃষি খাতকেও আরও অগ্রাধিকার দিতে হবে। কৃষকরা খাদ্য ঘাটতির দেশকে খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত করেছে। কিন্তু কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের প্রকৃত মূল্য না পেলে অনুৎসাহিত হবে, তা দেশের খাদ্য উৎপাদনে প্রভাব ফেলবে। তিনি কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে আহ্বান জানান। তিনি মোবাইল ফোনে কথা বলার ওপর কর আরোপ না করার আহ্বান জানান।বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী কর্মীদের এখন পর্যন্ত মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট প্রদান না করায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।দেশে এবার প্রথমবারের মতো শিশুদের বাজেট দেয়ার জন্য তিনি অর্থমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশুদের জন্য শিশু অধিদপ্তর করার আহ্বান জানান। তিনি মহিলাদের জন্য আলাদা ব্যাংক করার আহ্বান জানান।তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারীদের নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নে সাধারণ জনজীবনে যেন প্রভাব না ফেলে সেদিকে দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি ছিটমহলবাসীদের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা সবার জন্য সমান করার জন্য আহ্বান জানান।তিনি দীর্ঘদিন পর ভারতের সাথে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে ছিটমহলবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।