দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৮ জুন: রাজধানীর রামপুরার বনশ্রী এলাকা থেকে এক কোটি ৫ লাখ জাল টাকা ও টাকা তৈরির সরঞ্জামসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. আব্দুর রহিম শেখ (৩৫), আব্দুর রহিমের প্রথম স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৪), আব্দুর রহিমের দ্বিতীয় স্ত্রী মোসা. রুবিনা খাতুন (১৯), মোহাম্মদ আসাদ (২২) ও মোহাম্মদ তাজিম হোসেন (২৬)।
রোববার ভোর ৬টার দিকে বনশ্রীর কে ব্লকের ১৬ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সিনিয়র সহকারী পরিচালক মাকসুদুল আলম।তিনি জানান, আব্দুর রহিম শেখ এই চক্রের মূলহোতা। সে দীর্ঘদিন ধরে তার নিকটাত্মীয়দের নিয়ে এই ব্যবসা করে আসছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি দল তাদের গ্রেপ্তার করে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, শনিবার রাতে বনশ্রীর একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।ওই বাসায় এক কোটি চার লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যমানের জাল নোট এবং বেশ কিছু সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে রহিম শেখ নামের একজন রয়েছেন, যিনি এই চক্রের হোতা বলে র্যাবের ভাষ্য।মুফতি মাহমুদ বলেন, এ বিষয়ে র্যাব সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হয়।এর আগে গত ১৪ জুন ঢাকার শেরে বাংলা নগর এলাকা থেকে ৪০ লাখ টাকার জাল নোট ও সরঞ্জামসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই চক্রটি ঈদের আগে কোটি টাকার জালনোট বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিল। ওই চক্রের ১২ সদস্যের মধ্যে বাকি ছয়জনকে পুলিশ খুঁজছে বলেও সেদিন জানানো হয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম সেদিন ঈদের সময় কেনাকাটায় সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। নোট নিয়ে কারও সন্দেহ হলে বিপণি বিতানে বসানো জালনোট শনাক্তকরণ যন্ত্রে তা পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন তিনি।
রাজধানীর রামপুরা বনশ্রী এলাকা থেকে ১ কোটি চার লাখ টাকার জাল নোট ও দুই নারীসহ পাঁচজনকে আটক করছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।আসামিরা এবারের ঈদের ১০ কোটি টাকার জাল নোট বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিল বলে জানায় র্যাব। রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান এই তথ্য জানান। বনশ্রীর কে’ ব্লকের ১৬ রোডের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের তাদের আটক করা হয়।
তিনি আরো জানান, আটককৃতরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র হয়ে কাজ করতো যার মূল হোতা ছিলেন আব্দুর রহিম শেখ। ফাতেমা তার প্রথম এবং রুবিনা তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তারা এবারের ঈদের ১০ কোটি টাকার জাল নোট তৈরির পরিকল্পনা করেছিল।এসময় তাদের হেফাজতে থাকা ১ কোটি ৪ লাখ ৮০ হাজার জালটাকা, ১১টি টাকা তৈরীর স্ক্রীন শট, ৩টি বোর্ড, ২টি বিশেষ ডট কালার প্রিন্টার, ২টি ল্যাপটপ, ৪ রোল টাকার ভিতরের নিরাপত্তা সুতার ফয়েল, ২ কৌটা টাকার জলছাপে ব্যবহৃত আইপিআই প্রিন্ট্রিং কালি, ২০০টি প্রিন্টারের কার্টিজ, ১ বোতল রেডোসার ক্যামিক্যাল, ৮ রীম কাগজ, ১টি টাকা স্ক্যানার, ১টি লেমিনেটিং মেশিন এবং ২টি টাকা কাটিং গ্লাস জব্দ করে র্যাব।
আসামিদের বরাত দিয়ে মুফতি মাহমুদ জানান, আব্দুর রহিম শেখ ২০০৮ সালে হুমায়ুন নামে জালটাকা তৈরীর কারিগর ও চক্রের মূলহোতার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। সে হুমায়নের জালটাকা ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিতরণ করতো। দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করার ফলে সে জাল টাকা তৈরির বিদ্যা হাতে কলমে শিখে নেয় এবং বনশ্রীর এই ফ্ল্যাট ভাড়া করে জাল টাকা তৈরীর ব্যবসা শুরু করে।র্যাব মুখপাত্র বলেন, আসামিরা টাকার ভেতরের নিরাপত্তা সূতার ফয়েল চকবাজার, স্ক্রীন ও বোর্ড মালিটোলা, রেডোসার ক্যামিক্যাল মালিটোলা থেকে সংগ্রহ করতো। চক্রের আরো ৫-৬ জন সদস্যের মাধ্যমে জাল নোটগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতো এবারের ঈদের জাল টাকার পাশাপাশি ইন্ডিয়ান জাল রুপী ছাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে জানায় র্যাব।আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান মুফতি মাহমুদ খান।