দৈনিকবার্তা-রাজশাহী, ২৭ জুন ২০১৫: রাজশাহীতে প্রায় মেয়াদোত্তীর্ণ ৫০হাজার লিটার ভোজ্য তেল নিয়ে বিপাকে পড়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। পুষ্টি ও ফ্রেশ ব্র্যান্ডের এসব তেলের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে। এ কারণে গ্রাহকরা টিসিবির এই তেল আর কিনছেন না। একারণে টিসিবির ডিলাররা পণ্য তুলছেন না। এদিকে, প্রায় সাড়ে তিন লাখ লিটার তেল মজুদ থাকলেও অনুমতি না থাকায় বিক্রি করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, টিসিবি’র রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ে পুষ্টি ও ফ্রেশ ব্র্যান্ডের প্রায় ৫০ হাজার লিটার তেলের মজুদ রয়েছে। চতুর্থ ধাপে গত বৃহস্পতিবার ছিল পণ্য উত্তোলনে শেষ দিন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেশিরভাগ ডিলারই পণ্য উত্তোলন করেন নি। টিসিবি’র ডিলাররা জানান, পুষ্টি ও ফ্রেশ ব্র্যান্ডের এসব তেলের মেয়াদ রয়েছে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। কিন্তু মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে আসায় গ্রাহকরা কিনছেন না। ফলে মেয়াদের মধ্যে বিক্রি করতে না পারলে লোকসান গুণতে হবে। অপরদিকে, টিসিবি থেকে তেল না তুললে অন্য পণ্য দেয়া হবে না, এ কারণে টিসিবির পণ্য উত্তোলনে ডিলারদের আগ্রহ নেই। এছাড়া খোলাবাজারের টিসিবি পণ্যের দামের পার্থক্য খুব বেশি না হওয়ায় ডিলাররা পণ্য তুলতে আগ্রহী হচ্ছেন না।
টিসিবির রাজশাহী আঞ্চলিক অফিস জানায়, রাজশাহী বিভাগে তাদের ডিলার রয়েছেন ৪২০ জন। এর মধ্যে রাজশাহী নগরীতে ৮৮জন এবং জেলায় ২৭জন। বাকিরা বিভাগের অন্য সাত জেলায়। চতুর্থ ধাপে ডিলারপ্রতি বরাদ্দ ছিলো ৫০০ থেকে দেড় হাজার কেজি চিনি, ১০০ থেকে ২০০ কেজি ডাল, ৩০০ থেকে ৫০০ কেজি ছোলা ও ৩০০ থেকে ৮০০ লিটার পর্যন্ত তেল। গত ৪ জুন থেকে উত্তোলন শুরু হয়ে চলে ২৫ জুন পর্যন্ত। ওই সময়ের মধ্যে মাত্র ১১৪জন ডিলার তাদের বরাদ্দ উত্তোলন করেছেন। এর মধ্যে রাজশাহী নগরীতে ১৬জন এবং জেলায় মাত্র একজন ডিলার রয়েছেন। বাকিরা নানা অজুহাতে পণ্য উত্তোলন করেন নি।
টিসিবির ডিলার নগরীর নওদাপাড়ার হারুনুর রশিদ জানান, তেলের মেয়াদ খুব কম সময় আছে। আর রংটাও লালচে। চিনি ভেজা ভেজা। টিসিবির চিনি ৩৭ টাকা কেজি। কিন্তু বাইরে সাদা চিনি ৩৮ টাকা। ওটার দিকেই ক্রেতাদের নজর বেশি। টিসিবির ছোলার মান খুব ভালো। কিন্তু ছোলা ৩০০ থেকে ৫০০ কেজির বেশি দেয়া হচ্ছে না। আবার তেল না কিনলে অন্যগুলো দেয়া হয় না। এ কারণে এবার টিসিবি’র পণ্য নিয়ে ক্ষতি হচ্ছে। নগরীর বিনোদপুর এলাকার ডিলার অসীম রেজা বলেন, এবার ট্রাক ভাড়া করে পণ্য বিক্রি করে ভাড়াই উঠছে না। ক্রেতা নেই। বাজারের দামের কাছাকাছি হওয়ায় টিসিবির পণ্য কিনছে না ক্রেতারা।
এবিষয়ে টিসিবির রাজশাহী আঞ্চলিক অফিস প্রধান আনিছুর রহমান বলেন, এসব তেল ২০১৩ সালে উৎপাদিত। কিন্তু বাজারে ক্রাইসিস না থাকায় বিক্রি করা হয় নি। ফলে মেয়াদ এখন শেষের দিকে চলে এসেছে। এছাড়া চিনি রাজশাহীর হরিয়ান মিল থেকে সরবরাহকৃত উৎকৃষ্ট মানের। প্রথম দিকে আবহাওয়াজতিন কারনে কিছুটা ভেজা ভেজা মনে হচ্ছিলো, তবে এখন তা আর নেই। তবে তার দাবি, টিসিবির পণ্যের সঙ্গে খোলাবাজারের পণ্যের দামের পার্থক্য কম হওয়ায় ডিলাররা টিসিবির পণ্যে আগ্রহী হচ্ছেন না। তবে যেসব ডিলার পণ্য উত্তোলন করেন নি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।