Doinikbarta-madok1
দৈনিকবার্তা-রাজশাহী ,২৫ জুন :  ঈদকে সামনে রেখে রাজশাহীর পুঠিয়ায় প্রায় দুই শতাধিক সক্রিয় মাদক ব্যবসায়ী বানেশ্বর এলাকায় মাদকের জমজমাট ব্যবসা করছে। অপরদিকে ভরুয়াপাড়া পল্লীতে প্রতিদিন গড়ে ৫০ হাজার লিটার চোলাই মদ তৈরি করছে দু’গ্রুপের র্শীষ ১৫ জন মাদক ব্যবসায়ীরা। জেলার সর্ববৃহৎ চোলাই মদ পল্লীটি বেলপুকুর ইউনিয়নের কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিস ও পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সহয়তায় রয়েছে। পুঠিয়ায় প্রায় ৩০ টি পয়েন্টে প্রতিদিন কোটি টাকার মাদকদ্রব্য বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অফিস, পুঠিয়া থানা ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৬ টি ইউপি এলাকায় প্রায় সাড়ে চারশ মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে। এর মধ্যে বানেশ্বর ইউপি এলাকায় রয়েছে দু’টি গ্রুপে প্রায় দুই শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী। বেলপুকুর ভরুয়াপাড়ায় রয়েছে অর্ধ-শতাধিক র্শীষ মাদক সম্রাট। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কিছু অসাধু সদস্য অভিনব কায়দায় মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করে বিশেষ সমঝোতা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বানেশ্বর এলাকা থেকে মাদক ব্যবসায়ীরা উপজেলার সেনভাগ, ঝলমলিয়া, পুঠিয়া কৃষ্ণপুর, বাজার, দুদুর মোড়, গুচ্ছোগ্রাম, ধোপাপাড়া, বাসুপাড়া, শিবপুরহাট, বিড়ালদহ বাজার ও খুটিপাড়া, নামাজগ্রাম, ক্ষুদ্র জামিরা, বেলপুকুর, ভরূয়াপাড়া, মাহেন্দ্রা এলাকা থেকে প্রতিদিন কোটি টাকার মরননেশা ইয়াবা, হেরোইন, ফেন্সিডিল, চোলাইমদসহ ও বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক দিয়ে সরবরাহ করছে দেশের বিভিন্ন জেলা গুলোতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদক ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত থেকে চোরাই পথে চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মাদকদ্রব্য গুলো বানেশ্বর এলাকায় প্রবেশ করে। তারপর তা সাড়া দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। জানা গেছে, রাজশাহী জেলার চোলাইমদ তৈরির সর্ববৃহৎ পল্লী হচ্ছে ভুরুয়াপাড়া গ্রামের চেংড়ার বিলে। এই গ্রামে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বর্তমানে “ওরা ১৫ জনের একটি গ্রুপ” চোলাইমদ তৈরি করছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক নেতার দু’ভাই ও এক বোন বর্তমান আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রায় ৭ বছর যাবৎ রাজনৈতিক পরিচয়ে প্রকাশ্যে চোলাইমদ তৈরি করছে এবং আইন শৃংখলা বাহিনীর লোকজনকে সুবিধা দিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় তা সরবরাহ করছে। গত ৬ মাসে বেলপুকুরের চেংড়ার বিলসহ ভরুয়াপাড়ায় বিভিন্ন স্থানে ৯ দফা অভিযান চালিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইন শৃংখলা বাহিনীর লোকজন। সে সময় হাতে নাতে আটক হয়েছে অনেক মাদক ব্যবসায়ীরা। ধ্বংস করা হয়েছে হাজার হাজার লিটার চোলাইমদ ও মদ তৈরির বিভিন্ন উপকরণ। তবে আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীরা জামিনে বের হয়ে আবারো ফিরে আসছে তাদের পুরোনো পেশায়।

এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের ইনচার্জ (পুঠিয়া সার্কেল) ফরহাদ আখন্দের সাথে কয়েকদফা মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোন্দকার ফরহাদ আহমদ বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে আমার কোনো সমঝোতা নেই। যেখানেই মাদক সেখানেই অভিযান চালানো হচ্ছে।