দৈনিকবার্তা-রাজশাহী, ২৪ জুন: পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। পদ্মার যেসব এলাকায় শুকনো মৌসুমে কৃষক ধান চাষ করেছেন, সেইসব জায়গাসহ পুরো নদীতে পানি থৈ থৈ করছে। প্রধানত বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পানিই বাড়িয়ে দিচ্ছে পদ্মার পানির স্তর। কর্তৃপক্ষ পদ্মা তীরবর্তী যেসব অঞ্চল ঝুঁকিপূর্ণ মনে করত সেসব অঞ্চলে বিশেষ সতর্কতা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীতে পদ্মা নদীতে পানির উচ্চতা ১৮ দশমিক ৫০ মিটারে গেলে সেটা বিপদসীমা হিসেবে বিবেচিত হয়। এর আগে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ পানির উচ্চতা ২০ মিটার পর্যন্ত উঠেছিল। এ বছর ১৩ জুন নদীর পানির উচ্চতা ছিলো নয় দশমিক ৫৮ মিটার, ১৪ তারিখে এটা দাঁড়ায় নয় দশমিক ৬১ মিটার, ১৫ তারিখে দশ দশমিক ১০, ১৬ তারিখে দশ দশমিক ৬০ ও গত বুধবার এটা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ মিটার।
২০১৪ সালের জুন মাসেও পানি বৃদ্ধির হার প্রায় একই রকম ছিল। গত বছরের জুন মাসের ১৩ তারিখে এটা ছিল দশ দশমিক ৫৩ মিটার, ১৪ তারিখে দশ দশমিক ৫১, ১৫ তারিখে দশ দশমিক ৪৪, ১৬ তারিখে দশ দশমিক ৪৭, ১৭ তারিখে দশ দশমিক ৪৪ ও ১৮ তারিখে এটা ছিল দশ দশমিক ৩৮ মিটার। এই সময়ে ২০১৩ সালে পানির স্তর ছিলো ১৩ তারিখে দশ দশমিক ৮০ মিটার, ১৪ তারিখে দশ দশমিক ৮০, ১৫ তারিখে দশ দশমিক ৭০, ১৬ তারিখে দশ দশমিক ৬৫, ১৭ তারিখে দশ দশমিক ৬০ ও ১৮ তারিখে ছিলো পানির উচ্চতা দশ দশমিক ৫০ মিটার।
রাজশাহী শহর রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাত খান বলেন, বর্ষাকাল এলেই পদ্মাতীরবর্তী অঞ্চলগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। তীরবর্তী অঞ্চলগুলো সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর আমরা বিভিন্ন সময় মানববন্ধন থেকে শুরু করে স্মারকলিপি পেশ করেছি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখনো যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি।
ইতিমধ্যে পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে, এখনই ব্যবস্থা না নেয়া হলে বড় ধরনের হুমকির মুখ পড়বে নগরবাসী। রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, শহর রক্ষা বাঁধ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে আমরা সরকারের কাছে নিবেদন করেছি। এ ছাড়া নগরীর বুলনপুর থেকে শুরু হরিপুর পর্যন্ত বাঁধ সম্প্রসারিত ও মজবুত করার জন্য প্রস্তাব একনেকে পাশের অপেক্ষায় আছে। শহর রক্ষা বাঁধের কাছে পদ্মা নদীতে যাতে বালু উত্তোলন করা না হয় সে বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ছিলো। বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) নির্দেশ দেওয়া আছে যাতে ওই এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।