দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৪ জুন: রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে জোড়াখুনের মামলায় আটক সাংসদ পুত্র বখতিয়ার আলম রনিকে আবারো ৪ দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত। বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।এর আগে রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমানের আদালতে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) দিপক কুমার দাস সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য ২৪ জুন দিন ধার্য করেন।বখতিয়ার আলম রনি মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ও সংরক্ষিত আসনের এমপি পিনু খানের ছেলে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই দীপক কুমার দাসের করা সাতদিনের হেফাজতের আবেদন শুনে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আওয়ামী লীগের সাংসদ পিনু খানের ছেলে রনিকে এর আগেও চার দিন রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।গত ১৩ এপ্রিল রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে একটি কালো রঙের প্রাডো গাড়ি থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে তাতে অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী ও রিকশাচালক আবদুল হাকিম নিহত হন।এ ঘটনায় নিহত হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে ১৫ এপ্রিল রাতে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটির তদন্তভার গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আসে।এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৩১ মে মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিনু খানের ছেলে রনি ও তার গাড়িচালক ইমরান ফকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।আদালতের অনুমতি মেলার পর গত ৯ জুন রনিকে চার দিনের রিমান্ডে নেয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
ওই রাতে মাতাল রনি যানজটে আটকা পড়ে গুলি ছুড়েছিলেন বলে তার গাড়িচালক ইমরান এবং ঘটনার সময় গাড়িতে থাকা রনির বন্ধু কামাল মাহমুদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন।এছাড়া ওই সময় গাড়িতে থাকা রনির আরেক বন্ধু টাইগার কামালও পুলিশের কাছে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন বলে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন।৪২ বছর বয়সী রনির পিস্তলের গুলিতেই যে ওই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে,তা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।বুধবার পুলিশের নতুন রিমান্ডের শুনানিতে পুলিশের সহকারী কমিশনার ( প্রসিকিউশন) মিরাস উদ্দিন বলেন, রনি কী কারণে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটান, তা জানার জন্য তাকে আবারও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।তাকে নিয়ে বিভিন্ন হোটেলে ঘুরে সে কার কার সঙ্গে মদ পান করেছে, সে তথ্যও জানা প্রয়োজন।এর বিরোধিতা করে রনির আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ হিরু বলেন, ঘটনার সময় সে মাতাল ছিল, এ কারণে এ বিয়োগান্তক পরণতি হয়েছে। কিন্তু তার হত্যার উদ্দেশ্য ছিল না।এ মামলার পর্যাপ্ত এভিডেন্স আছে, সাক্ষীদের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। সব তথ্য আলোয় চলে এসেছে। সুতরাং এই পর্যায়ে এসে রিমান্ডের যৌক্তিকতা নেই।মিরাস উদ্দিন এ সময় বলেন,মাতাল হয়ে থাকলেও অপরাধের বিচারে কোনো সুবিধা পাবেন না আসামি। মাতালের কাজও সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী অপরাধ হিসাবে পরিগণিত হবে, বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।রনিকে নিয়ে সংবাদ পওকাশের ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা তার মা সাংসদ পিনু খানকে ডুবিয়ে ফেলেছে বলেও মন্তব্য করেন আসামির আইনজীবী।এদিন আদালতে রনির পরনে ছিল আকাশী পাঞ্জাবি, মাথায় ছিল সাদা গোল টুপি।