23-06-15-PM_Parliament-1

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ জুন: আদর্শের ওপর প্রতিষ্ঠিত দলকে কেউ ধ্বংস করতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ উপমহাদেশের প্রাচীনতম দলগুলোর মধ্যে একটি। শত প্রতিকূলতার মাঝেও আওয়ামী লীগ টিকে আছে।আদর্শের ওপর ভিত্তি করে যে দল প্রতিষ্ঠিত সে দলকে কেউ ধ্বংস করতে পারে না। আওয়ামী লীগকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না। শত প্রতিকূলতার মাঝেও আওয়ামী লীগ এগিয়ে যাচ্ছে।মঙ্গলবার সংসদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। খবর বাসসের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ দেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়িত্ব দিয়েছিল। সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে আসছে। দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণ ও উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রতীক হচ্ছে নৌকা। উজানে নাও ঠেলে ঠেলে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছে যাচ্ছি।শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে আওয়ামী লীগের ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। সেই সূর্য উদিত করতেই ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগের জন্ম।বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, জাতির পিতা আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬৬-এর ছয় দফাসহ প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে আওয়ামী লীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আওয়ামী লীগের ইতিহাস বাঙালি জাতির অর্জনের ইতিহাস, ত্যাগ-তিতীক্ষার ইতিহাস। ৪৯ সালে জন্মের পর আওয়ামী লীগের শত শত নেতা-কর্মী কারাবরণ করেছে, অত্যাচার, নির্যাতনে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণ প্রকল্প, একুশে ফেব্র“য়ারি শহীদ দিবস ঘোষণা বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, শিল্প-সাহিত্য, কলা প্রতিটি বিষয়ে পূর্ণতা এসেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত বাঙালি জাতির জন্য ছিল স্বর্ণযুগ। ওই সময়ে বাঙালি জাতি তার আত্মমর্যাদা পেয়েছে। এরপর ২০০৮ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দেশের ক্ষমতায় রয়েছে। বিশ্বমন্দার পরও দেশ উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাঙালি জাতি বিশ্বব্যাপী আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠছে। যে কোন ত্যাগই বৃথা যায় না।তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সদ্ভাব বজায় রেখে নিজেদের অর্জনগুলো আদায় করে নিচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ার এ দেশ পিছিয়ে যেতে পারে না। বাংলাদেশ রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেশ, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এটা দেখিয়ে দিয়েছে। একটু উৎসাহ দিলে বাঙালি যে কোন কিছু অর্জন করতে সক্ষম।অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে আওয়ামী লীগের পাশে থাকায় দলের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।জাতীয় সংসদে মঙ্গলবার অধিবেশনের শুরুতেই এক অনির্ধারিত আলোচনায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, জনগণ বিভ্রান্ত হয়নি। জনগণ আওয়ামী লীগের পাশেই ছিল।আওয়ামী লীগকে সব সময় অপপ্রচার মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হয়েছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে শান্তিপূর্ণ ও উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে সবার সহযোগিতা চান।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে আত্মপ্রকাশ ঘটে আওয়ামী লীগের। প্রতিষ্ঠার পর থেকে রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এ দল হয়ে ওঠে পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি।আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই ১৯৭১ সালে শুরু হয় স্বাধীনতার যুদ্ধ। নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যূদয় ঘটে বাংলাদেশের।১৭৫৭ সালে এই ২৩ জুনই পলাশীর যুদ্ধে সিরাজুদ্দৌলার পরাজিত হওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যে স্বাধীনতার সূর্য সেদিন অস্তমিত হয়েছিল, তা উদিত করতেই ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগের জন্ম।প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগকে যে দায়িত্ব দিয়েছে, সরকার তা আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করছে।আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার বহু চেষ্টা হয়েছে। কেউ সফল হয়নি, পারবেও না, বলেন আওয়ামী লীগ প্রধান।সরকার বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থার কথা বিবেচনা করেই রাষ্ট্র পরিচালনা করছে জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বাংলাদেশ পারে, বাংলাদেশ পারবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া এই দেশ এগিয়ে যাবে। শেখ হাসিনা তার বক্তব্যের শুরুতে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও হোসেন শহীদ সোহরায়োর্দীকেও স্মরণ করেন।তনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় দেশ যাতে এগিয়ে যেতে পারে- সে লক্ষ্যেই আওয়ামী লীগ কাজ করছে।অন্যদের মধ্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আলোচনায় অংশ নেন।