দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ জুন: পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন,বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও স্বাবলম্বী দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে এ সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে উন্নয়ন বাজেটে সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছে।মন্ত্রী বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়নে কর্মসূচির বরাদ্দ ৯৭ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি টাকার অংকে এ যাবত কালের সর্ববৃহৎ বিনিয়োগ পরিকল্পনা। বিগত ৫ বছরে গড় প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। তিনি মঙ্গলবার সংসদে সরকারি দলের সদস্য মমতাজ বেগমের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।মুস্তফা কামাল বলেন, বর্তমান সরকারের সমন্বিত প্রয়াসের ফলে অর্থবছর ’১০ থেকে অর্থবছর ’১৪ পর্যন্ত দেশে ও বিদেশে মিলে মোট ১০ দশমিক ০৮ মিলিয়ন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগকে প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তা ও বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার ফলশ্র“তিতে শ্রম উৎপাদনশীলতা রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।তিনি বলেন, সার্বিক জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে শিল্পের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা প্রদান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে অধিক গুরুত্ব দেয়া এবং শিল্পখাতে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সংশি।লষ্ট ব্যক্তিদের দক্ষতা উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আওতায় বেকার যুবদের কর্মসংস্থান উপযোগী দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৮ লক্ষাধিক তরুণকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে এবং ২ লক্ষাধিক প্রশিক্ষিত তরুণের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। দশটি জেলায় ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতায় ৫৬ হাজারের অধিক তরুণের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশের অস্থায়ী আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকারের দারিদ্র্য নিরসনমুখী বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর শতকরা হার হ্রাস পেয়েছে ২৩.৬০ ভাগে।মুস্তফা কামাল বলেন, দারিদ্র্য হার হ্রাসের সাথে যুক্ত হয়েছে জীবন চক্রের পরিব্যাপ্তি বৃদ্ধি তথা প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল গড়ে ৭০ বছর হওয়া, মাথাপিছু খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি, প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হারে মেয়ে শিশুর শিক্ষা গ্রহণের হার বৃদ্ধি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মেয়েদের শিক্ষার হার বৃদ্ধি, সুপেয় পানির ব্যবস্থাকরণ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে।তিনি বলেন, প্রাথমিক স্কুলের ১শ’ ভাগ ভর্তির লক্ষ্যমাত্রা প্রায় অর্জিত হয়েছে। ২০২১ সালে উচ্চ আয়ের কর্মসংস্থানের জন্য তরুণ সমাজকে ডিজিটাইজড শিক্ষা ব্যবস্থায় সংযুক্ত করতে প্রায় ২০ হাজার ৫শ’ মাধ্যমিক এবং ১ হাজার ৫০৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষ প্রস্থত করা হয়েছে।মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যেই মোট প্রজননহার ২ দশমিক ১১-এ নেমে এসেছে, একই সময়ে শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজার জীবিত জন্মে ৩২ জন এবং পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের ক্ষেত্রে ৪১ জনে নেমে এসেছে। এছাড়াও, মাতৃ মৃত্যুহার হ্রাসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।