দৈনিকবার্তা-ঠাকুরগাঁও, ২৩ জুন: কোন্দল আর গ্র“পিংয়ের কারণে সম্মেলনের আট মাস পরও গঠন হয়নি ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। কবে নাগাদ হবে তাও বলতে পারছেন না নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এ কারণে সাংগঠনিক কর্মকান্ড ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নেতারা আন্তরিকভাবে স্বক্রিয় হচ্ছেন না।
সর্বশেষ ২০০৫ সালের ২২ মে বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগ জেলা সম্মেলনে রমেশ চন্দ্র সেনকে সভাপতি ও সাদেক কুরাইশীকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠিত হয়েছিল। এই কমিটির নেতাকর্মীরা ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোট ঠাকুরগাঁওয়েও বিপুল বিজয় অর্জন করে। এ ছাড়াও ৫টি উপজেলা, ঠাকুরগাঁও পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনে দল সাফল্য অর্জন করে। কিন্তু বিগত সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হরতালসহ নাশকতামূলক কর্মকা- প্রতিরোধে দলের ভূমিকা নিয়ে নানা বিতর্ক ও হতাশা দেখা দেয়।
এর পর দীর্ঘ ১০ বছর পর গত ১৬ অক্টোবর স্থানীয় ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদ হলরুমে আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গোপন ব্যালটের মাধ্যমে কাউন্সিলরদের ভোটে দবিরুল ইসলামকে সভাপতি ও সাদেক কুরাইশীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সম্মেলনের পর জরুরি ভিত্তিতে কার্যকরী কমিটি গঠন করার নিয়ম থাকলেও গত ৮ মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি। ফলে বিভিন্ন জাতীয় ও দলীয় কর্মসূচিতে অনেক নেতাকর্মীর অংশ গ্রহণ কমে গেছে।
দলের একাধিক নেতাকর্মী সূত্রে জানা গেছে, আগের কমিটি থেকেই জেলা শাখা দ্বিধাবিভক্ত ছিল। নেতৃত্বে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও সম্মেলনে গতি আনতে পারেনি জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। শীর্ষ নেতারা স্ব-স্ব গ্র“প শক্তিশালী করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর একটি প্রভাবশালী গ্র“প দলের নাম ভাঙ্গিয়ে টেন্ডারবাজি, হাটবাজার নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্য, বিচার সালিসের নামে নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে হুমকি-ধামকি দিয়ে টাকা আদায় করতে বেপরোয়া হয়ে উঠায় দলের ভাবমূর্তি তৃণমূলপর্যায়ে মারাত্মকভাবে ক্ষুণœ হচ্ছে। এমন নেতাকর্মীদের কমিটিতে স্থান দেয়া ঠিক হবে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের প্রবীণ কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, জেলা আওয়ামী লীগের দু’টি গ্র“প এখন ওপেন সিক্রেট। কমিটিতে স্থান পাওয়া নিয়ে এই দুই গ্র“পে টানাপড়েন চলছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সাদেক কুরাইশী জানান, কমিটি গঠন নিয়ে কোনো কোন্দল নেই। আমরা একটি খসড়া করেছি কয়েকদিনের মধ্যে ঊর্ধ্বতন নেতাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দবিরুল ইসলাম এমপি জানান, কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে এবং স্থানীয় নেতাদের সমন্বয়ে গঠনতন্ত্র অনুসারেই কমিটি সাজানো হবে।