দৈনিকবার্তা- নাটোর, ২১ জুন: মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) কতৃক অপহৃত বিজিবি নায়েক আব্দুর রাজ্জাকের নাটোরের সিংড়ার বাড়িতে এখন শুধুই কান্নার রোল। ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে ধরে তার মায়ের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। বাবা দিবসে নতুন পুত্র সন্তানের বাবা হলেও সন্তানের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না আব্দুর রাজ্জাক। রাজ্জাকের পরিবারের সদস্যদের একটিই দাবী তাকে দ্রুত উদ্ধার করা হোক।জানা যায়, জেলার সিংড়া উপজেলার বলিয়াবাড়ি গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন তারা মোল্লার ছেলে আব্দুর রাজ্জাক দেশমাতৃকার সেবায় আত্মনিয়োগ করতে ২১ বছর আগে তৎকালনি বিডিআর-এ যোগ দেন। বার্মা সীমান্তে কর্মরত থাকা অবস্থায় গত বুধবার মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ খবর পাওয়া পর থেকে পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ রাজ্জাক অপহৃত হওয়ার পর বিজিবি তাদের কিছু জানায়নি। গণমাধ্যম্যে ছেলের হাত-পা বাঁধা ছবি দেখে তারা এ ঘটনা জানতে পারেন।
অপহরণের পর বিজিবির সিও ফোন করে তাদের জানান, পতাকা বৈঠক করে একদিনের মধ্যেই রাজ্জাককে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু এখনও সরকারের পক্ষ থেকে তাকে উদ্ধারের কোন ব্যবস্থাই তারা দেখতে পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় তারা উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাচ্ছেন। এদিকে রবিবার ১১ টার দিকে রাজ্জাকের স্ত্রী আসমা বেগম আর একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান প্রসব করেন। অথচ এই খুশির মুহুর্তে তার বাবা কাছে নেই। অপহৃত রাজ্জাকের বাবা তোফাজ্জল হোসেন, বোন তসলিমা খাতুন সহ পরিবারের সবাই কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। মা বুলবুলি বেগম কাঁদতে কাঁদতে মুর্চ্ছা যাচ্ছেন। ছেলে রাকিবুল ইসলাম, মেয়ে ফারিয়া জাহান রিতু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। আব্দুর রাজ্জাকের বাবা তোফাজ্জল হোসেন জানান, গত সোমবারে তার সাথে ছেলে রাজ্জাকের শেষ কথা হয়। এর পর আর কোন খবর পাননি। ফেসবুকে বিদেশী গণমাধ্যমে ছবি দেখে তারা রাজ্জাক অপহরণের খবর জানতে পারেন।
সপ্তম শ্রেণীতে পড়–য়া ছেলে রাকিবুল ইসলাম ও চতুর্থ শ্রেণীতে পড়–য়া মেয়ে ফারিয়া জাহান রিতু বাবার অনুপস্থিতি সহ্য করতে পারছে না। তারা জানেনা তাদের বাবার কি হয়েছে। আর কোনদিন তাকে দেখতে পাবে কিনা। তাদের এ অবস্থায় প্রতিবেশীরাও স্তব্ধ হয়ে গেছে। সরকারের কাছে আব্দুর রাজ্জাককে সুস্থ অবস্থায় তাদের মাঝে অতি দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার দাবী পরিবারের সদস্য তথা এলাকার সবার।এব্যাপারে নাটোর জেলা প্রশাসক মশিউর রহমানর জানান, এধরনের কোন তথ্য তার কাছে নেই বা সরকারি কোন দপ্তর থেকে তাকে জানানো হয়নি। এদিকে এ ব্যাপারে সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা খাতুন বলেন, এ বিষয়ে আমরা কোন সরকারী বার্তা পাইনি। তবে অন্য একটি কাজে আমি ওই এলাকায় অবস্থান করছি আমি ওই পরিবারের সাথে দেখা করে আসব। আর এরজন্য কিছু করার থাকলে সেটা সরকারের উচ্চ মহলে জানানো হবে।