Mujibul-quk

দৈনিকবার্তা-গৌরনদী, ২১ জুন: ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট ৯ জুলাই থেকে, ফিরতি ১৬ জুলাই হবে। টিকিট বিক্রি চলবে ১৩ জুলাই পর্যন্ত।জুলাইর ১৬ তারিখ থেকে পাওয়া যাবে ফিরতি টিকিট।সকাল নয়টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি চলবে। রোববার বিকেলে রাজধানীর রেল ভবনের যমুনা সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক।তিনি বলেন, ৯ জুলাই পাওয়া যাবে ১৩ জুলাইয়ের টিকিট, ১০ জুলাই ১৪ জুলাইয়ের, ১১ জুলাই ১৫ জুলাইয়ের, ১২ জুলাই ১৬ জুলাইয়ের এবং ১৩ তারিখে ১৭ জুলাইয়ের টিকিট দেওয়া হবে।এছাড়া ফিরতি টিকিট বিক্রি হবে ১৬ জুলাই থেকে। পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে বিক্রি হবে ফিরতি টিকিট। ওইদিন বিক্রি হবে ২০ জুলাইয়ের টিকিট, ১৭ জুলাই ২১ জুলাইয়ের, ১৮ জুলাই ২২ জুলাইয়ের, ১৯ জুলাই ২৩ জুলাইয়ের, ২০ জুলাই ২৪ জুলাইয়ের ফিরতি অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে।ট্রেনের টিকিটের বিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, টওতিবারের মতো এবারো কালোবাজারি প্রতিরোধে একজন যাত্রীকে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট দেওয়া হবে। ঈদে যাত্রী চলাচলেও যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয় সে জন্য রেলওয়ে স্টেশন ও স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।

ঈদকে ছুটিকে সামনে রেখে ৯ জুলাই থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ট্রেনের আগাম টিকেট বিক্রি শুরু হবে।ধাপে ধাপে ১৩ জুলাই পর্যন্ত এই টিকেট বিক্রি হবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষ আগামী ২০ জুলাই ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে বাংলাদেশে। ট্রেনে ঢাকা ও চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়ার জন্য ৯ জুলাই ১৩ তারিখের, ১০ জুলাই ১৪ তারিখের, ১১ জুলাই ১৫ তারিখের, ১২ জুলাই ১৬তারিখের এবং ১৩ জুলাই ১৭ তারিখের টিকেট বিক্রি হবে। ঢাকার কমলাপুর ও চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে এসব টিকেট।ঈদের পর ফেরার জন্য ২০ জুলাইয়ের আগাম টিকেট পাওয়া যাবে ১৬ জুলাই, ২১ জুলাইয়ের টিকেট পাওয়া যাবে ১৭ জুলাই, ২২/২৩ জুলাইযের আগাম টিকেট পাওয়া যাবে ১৯ জুলাই, ২৪ জুলাইয়ের আগাম টিকেট পাওয়া যাবে ২০ জুলাই।এছাড়া ঈদের পরে রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় টিকেট বিক্রি হবে বলে জানান রেলমন্ত্রী।

এদিকে, সংসদে ৩০০ বিধিতে দেয়া এক বিবৃতিতে রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক বলেছেন, চট্টগ্রামে সেতু ভেঙ্গে তেলবাহী ট্রেন দুর্ঘটনা তদন্তে দু’টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দু’টি কমিটি ৫ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করবে।দুর্ঘটনা তদন্তে চিফ মেকানিক্যাল (পূর্ব) এর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি ও বিভাগীয় প্রকৌশলী-১, চট্টগ্রামকে আহ্বায়ক করে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দু’টি কমিটি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে।মন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই দায়িত্ব অবহেলার জন্য সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম আবদুল হালিম ও ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সেতু) আকবর আহমেদ ফেরদৌসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে সেতুটির অস্থায়ী কাঠামো পুননির্মাণের জন্য সিসি ক্রীব, জয়েন্ট, স্লীপার, রেল ও অন্যান্য সামগ্রী ব্রিজ সাইটে আনা হয়েছে। অস্থায়ী কাঠামো থেকে ওয়াগন সরানোর পরপরই অস্থায়ী কাঠামোর পুননির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।তিনি বলেন, অস্থায়ী কাঠামো এবং এর উপর রেলপথ পুননির্মাণের পর লাইনচ্যুত ইঞ্জিন এবং ভূমিতে থাকা ওয়াগনসমূহ উদ্ধার করা যাবে। উদ্ধার কাজ সমাপ্ত করে ট্রেন যোগাযোগ পুনরায় চালু করতে আরও ৩ দিন সময় লাগবে। দুর্ঘটনাস্থল সেতুর উপর হওয়ায় রেল যোগাযোগ পুনঃস্থাপন ও উদ্ধার কার্যক্রমে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হচ্ছে বলে তিনি জানান।

মুজিবুল হক বলেন,সেতুটি পুনঃনির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে এবং সেতুটির দু’টি অ্যাবাটমেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বেশ কিছুদিন যাবত অস্থায়ী কাঠামোর উপর দিয়ে সীমিত গতিতে ট্রেন চলাচল করছিল।মন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনায় পতিত ট্যাকং ওয়াগন নং-বিটিকে ৬০০০১, বিটিকে-৬০২৪৬ ও বিটিকে-৬০১৯২ থেকে কিছু ফার্নেস অয়েল খালের পানিতে পড়ে যায়। খালের পানিতে পড়ে যাওয়া তেল যাতে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী তেল অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পরপরই কিছু তেল আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে যা অপসারণের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, গত ১৯ জুন দুপুরে রেলওয়ের ষোলশহর-দোহাজারী শাখা লাইনের গোমদন্ডী-ধলঘাট সেকশনের মধ্যাস্থিত সেতু নং-সিডি-২৪-এ তেলবাহী সাটল ট্রেন দুর্ঘটনায় পতিত হয়। দুর্ঘটনায় সেতু নং-সিডি ২৪-এর অস্থায়ী কাঠামো ভেঙ্গে যায় এবং ট্রেন ইঞ্জিন নং ২২৩৬ সহ চারটি তেলবাহী ট্যাংক ওয়াগন নং বিটিকে-৬০০০১, বিটিকে-৬০৪৬, বিটিকে-৬০১৯২ ও বিটিকে-৬০০৭৪ সেতু ও রেল লাইন থেকে পড়ে যায়। ইঞ্জিন নং ২২৩৬ সেতু পার হয়ে ধলঘাট প্রান্তে অস্থায়ী কাঠামোর একাংশ ইনফ্রিঞ্জ করে খালের পার্শ্বে পড়ে যায়।মন্ত্রী বলেন, ইঞ্জিনের পরবর্তী ২টি ওয়াগন বিটিকে- ৬০০০১ ও বিটিকে-৬০২৪৬ সেতু থেকে খালের পানিতে পড়ে গিয়ে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত হয়। ইঞ্জিন থেকে ৩য় ওয়াগন বিটিকে-৬০১৯২ গোমদন্ডী প্রান্তে খালের পার্শ্বে পড়ে যায় এবং সেতুর অস্থায়ী কাঠামোকে আংশিকভাবে ‘ইনফ্রিঞ্জ’ করে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। ইঞ্জিন থেকে ৪র্থ ওয়াগন বিটিকে-৬০০৭৪ এর সব চাকা লাইনচ্যুত হয় এবং রেলপথের পার্শ্বে দাঁড়ানো অবস্থায় থাকে। দুর্ঘটনার ফলে গোমদন্ডী-ধলঘাট সেকশনের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধারকারী ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে দুর্ঘটনাস্থলে রওনা হয় এবং উদ্ধারকারী ট্রেনের ইঞ্জিন দুর্ঘটনায় কবলিত ট্রেনের পেছনের ৪টি তেলবাহী ওয়াগন ও গার্ড ব্রেক গোমদন্ডী স্টেশনে নিয়ে যায়।মুজিবুল হক বলেন, লাইচ্যুত ৪র্থ ওয়াগন বিটিকে-৬০০৭৪ এর তেল ট্রান্সশিপমেন্ট ব্যতিত এ ওয়াগনটিকে উদ্ধারের করা সম্ভব হবে না বিধায় অন্য একটি খালী ওয়াগন এবং তেল ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য পাম্প আনয়ন পূর্বক ওয়াগন নং-বিটিকে ৬০০৭৪ খালী করা হয় এবং লাইনের পাশে সরিয়ে রাখা হয়। ৩য় ওয়াগন বিটিকে-৬০১৯২ কে সেতুটির অস্থায়ী কাঠামোর উপর থেকে সরানো হয়।