1434029502

দৈনিকবার্তা-পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) ২১জুন: জয়পুরহাট চিনিকলের উৎপাদিত প্রায় ৩৫ কোটি টাকা মূল্যের চিনি অবিকৃত অবস্থায় গোডাউনে পড়ে রয়েছে। আর এই চিনি বিক্রি না হওয়ায় মিল কর্তৃপক্ষ পড়েছে বিপাকে। চিনি বিক্রি না হওয়ায় মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছে না। বেতন না পাওয়ার কারণে মিলের ১ হাজার ১শ’ শ্রমিক কর্মচারী মানবেতের জীবন যাপন করছেন। এই ১ হাজার ১শ’ শ্রমিক কর্মচারী তিন মাসের বেতন পাওনা রয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা।

গত ৩ মাস যাবৎ শ্রমিক কর্মচারীরা বেতন না পাওয়ার কারণে তারা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়াও প্রায় বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। গত চার বছরের উৎপাদিত চিনির অধিকাংশ চিনিই অবিক্রিত অবস্থায় গোডাউনে পড়ে রয়েছে। বর্তমানে চিনি মজুত রয়েছে ৯ হাজার ৪২১ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ২০১২-২০১৩ মৌসুমের ১৫৯.১৫ মেট্রিক টন, ২০১৩-২০১৪ মৌসুমের ২১১৫.১৫ মেট্রিক টন চিনি এবং ২০১৪-২০১৫ আখ মাড়াই মৌসুমের ৫ হাজার ৯২১ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত অবস্থায় গুদামে পড়ে রয়েছে। আর এই ৯ হাজার ৪২১ মেট্রিক টন অবিক্রিতত চিনির মূল্য ৩৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

জয়পুরহাট চিনিকলের শ্রমিক মোঃ কোরবান আলী জানান, তিনি তিন মাস কোন বেতন পাননি। তার সংসারে বাবা-মা, এক ছেলে, এক মেয়ে, স্ত্রী ও তাকে নিয়ে সংসারে ৬ জন। তিন মাস বেতন না পাওয়ায় তাদের অনাহারে থাকতে হচ্ছে। এমনকি ছেলে মেয়েদের লেখা পড়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। প্রথম দুই মাস দোকানে বাকি কেনাকাটা করলেও টাকা দিতে না পারায় দোকানীরাও আর বাকি দিতে চাচ্ছে না। ফলে তারা বিপদের মধ্যে রয়েছেন। মিলের আরেক কর্মচারী মোজাম্মেল হকও একই কথা জানান।

31536_194এদিকে জয়পুহাট চিনিকলের অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীদের মিল কর্তৃপক্ষ তাদের অবসর ভাতা নগদ অর্থে পরিশোধ করতে পারছে না। তাদের অবসর ভাতা হিসেবে চিনি নিতে হচ্ছে। এই চিনি নিয়ে অবসরপ্রাপ্তরা পড়েছেন বিপাকে। বাজারে চিনি বিক্রি না হওয়ায় তাদের প্রতি কেজি চিনি ৩ থেকে ৪ টাকা কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে তাদের প্রত্যেক অবসরপ্রাপ্তকে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে। সদ্য অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী দেওয়ান মোঃ বদিউজ্জামান জানান, সদ্য অবসরপ্রাপ্ত ১৫ জন শ্রমিক কর্মচারী সবাইকে অবসরভাতা হিসেবে চিনি নিতে হচ্ছে।

আর বাজারে সেই চিনি বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে তাদের প্রত্যেকের ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে। জয়পুরহাট চিনিকল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আফজাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম এই অবিক্রিত চিনি বিক্রির জন্য প্রধানমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ক্মানা করেছেন। অপরদিকে এই সংকটে উত্তোরনের জন্য মিল কর্তৃকপক্ষ চিনি প্যাকেটজাত করে বিক্রি শুরু করছে। তারা এক কেজি চিনির মূল্য ৪২ টাকা ও ২ কেজি চিনির মূল্য ৮৩ টাকা। তারা আপাতত ৬০ মেট্রিক টন চিনি প্যাকেট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জয়পুরহাট চিনিকলের ব্যবস্থপনা পরিচালক মোঃ আব্দুস সালাম জানান।