দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ২১ জুন: আফ্রিকা থেকে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আনা চার জিরাফের মধ্যে একটি শনিবার বিকেলে মারা গেছে। ময়না তদন্ত শেষে রবিবার ভোররাতে সেটিকে পার্কের মধ্যেই দাফন করা হয়েছে। জিরাফটি কি রোগে বা কেন মারা গেছে এ ব্যাপারে প্রকৃত তথ্য জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট চিকিৎক ও পার্ক কর্তৃপক্ষ। তবে প্রাথমিকভাবে ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া জনিত কারনে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের সমস্যার ফলে জিরাফটি মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে ।গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের দু’কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চারটি জিরাফ ২০১১সালে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আনা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি জিরাফ গত ১২ জুন থেকে অসুস্থ্য হয়ে খুঁড়িয়ে হাটতে শুরু করে এবং খাওয়া কমিয়ে দেয় ও ঝিমুতে থাকে। এ লক্ষণ দেখা দেয়ায় পার্কের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও লোকজন জিরাফটিকে সুস্থ্য করার চেষ্টা করেন। কিন্তু জিরাফটির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং পর্যায়ক্রমে জিরাফের পেছনের অংশ অবশ হয়ে পড়ে।
একপর্যায়ে শনিবার সকালে পার্ক কর্তৃপক্ষ জিরাফটিকে সুস্থ্য করার লক্ষ্যে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী রোগের মেডিসিন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আব্দুর রহমান ও সার্জারী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, শ্রীপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল জলিল ও পার্কে নিয়োজিত পশু চিকিৎসক ডা. জুলকার নাইম মানিককে নিয়ে চিকিৎসার বোর্ড গঠণ করে। এরপর চিকিৎসকগণ অসুস্থ্য জিরাফের চিকিৎসার কাজ শুরু করলেও সেটিকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। শনিবার বিকেল ৬টার দিকে হঠাৎ করেই মারা যায় জিরাফটি। রাতেই ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শাহাব উদ্দিনের উপস্থিতিতে মৃত জিরাফের ময়না তদন্ত করা হয় এবং রোগ নির্ণয়ের জন্য স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত স্যাম্পল রবিবার ঢাকার কেন্দ্রীয় পশু রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগার ও ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পরে রবিবার ভোররাতে মৃত জিরাফটিকে পার্কের মধ্যেই মাটি চাপা দেয়া হয়।শ্রীপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল জলিল জানান, জিরাফ অত্যন্ত ‘সেনসেটিভ’ প্রাণী। কোন্ রোগে আক্রান্ত হয়ে জিরাফটি মারা গেছে এখনই সে সম্পর্কে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া জনিত কারনে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের সমস্যার ফলে সেটি মারা গেছে।এব্যাপারে দর্শণার্থী ও স্থানীয়রা জানান, জিরাফটি কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনে অসুস্থ্য হওয়ার প্রথম থেকে সুচিকিৎসা না পাওয়ায় মারা গেছে।