দৈনিকবার্তা-কুমিল্লা, ২১ জুন ২০১৫: দীর্ঘ ৬০ বছর পর উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ কুমিল্লার কৃতিসন্তান শচীন দেব বর্মণের পৈত্রিক বাড়ীতে শচীন দেব বর্মণ স্মরণানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিল্পকলা একাডেমি ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সহায়তায় শহরের চর্থায় শচীন দেব বর্মণের বাড়ীর আঙ্গিনায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক মোঃ হাসানুজ্জামান কল্লোলের সভাপতিত্বে অনু্িঠত স্মরণানুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক মেহেরুন্নেছা বাহার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, পুলিশ সুপার শাহ মোঃ আবিদ হোসেন, আদর্শ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোঃ আবদুর রউফ।
আলোচক ছিলেন সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নুরুল আনোয়ার, বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী কিরণ চন্দ্র রায়, এডভোকেট আহমেদ আলী, এডভোকেট গোলাম ফারুক, মোঃ সোহরাব উদ্দিন। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শচীন দেব বর্মণের গান পরিবেশন করেন কিরণ চন্দ্র রায়, আবু বকর সিদ্দিকসহ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ও স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ। উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ শচীন দেব বর্মণ ১৯০৬ সালের ১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের চর্থায় তার পৈতৃক নিবাসে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নবদীপ চন্দ্র বাহাদুর ত্রিপুরার রাজবংশীয় ছিলেন। মাতার নাম নিরুপমা দেবী। তাঁর বাংলা লোকগীতির সুর উপমহাদেশের জনমানসে সাড়া জাগিয়েছে। তাঁর সৃষ্টিশীল সঙ্গীত ১৯৩৩ সাল থেকে ১৯৭৪ পর্যন্ত শচীন দেব একক কণ্ঠে ১২৭টি গান গ্রামোফোনে রেকর্ড করেন তাঁর সহধর্মিনী যারাদেব বর্মন এবং একমাত্র পুত্র রাহুল দেব বর্মণ।
হিন্দী চলচ্চিত্র জগতেও শিল্পী ও সুরকার হিসেবে উপমহাদেশে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। ১৯৬৯ সালে ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত হন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর গান মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। শচীন দেব বর্মণ ১৯৭৫ সালের ৩১ অক্টোবর ভারতে পরলোকগমন করেন। ১৯২৫ সালে তিনি কুমিল্লায় পৈত্রিক নিবাস ছেড়ে ভারতে গমন করে সর্বভারতীয় সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর পরিত্যক্ত বাড়ীটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উদ্ধার করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় একটি জাতীয় পর্যায়ের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে চলতি বছর বরাদ্দকৃত ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রাচীন বাড়িটির প্রাথমিক পর্যায়ের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।