দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ জুন : আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সবসময় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অনেক মানুষেরই স্মৃতিশক্তি কম থাকে। তাই স্মৃতিশক্তি বাড়াতে তাদের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরী। স্বাস্থ্যকর খাবার অর্থ শুধু মাছ বা মাংস খাওয়া নয়। মহানবী (সা.) নিজে যে খাবার খেতেন এবং যে খাবার গুলো উনার উম্মতদের খেতে বলেছেন সেগুলো হলো-
১। ডালিম-বেদানা : বেদানার পুষ্টিগুণ ও খাদ্যগুণের পাশাপাশি এটার ধর্মীয় একটি দিক আছে এবং নবীজী(সাঃ) বলতেন, এটা আহারকারীদের শয়তান ও মন্দ চিন্তা থেকে বিরত রাখে।
২। মধু: মধুর নানা পুষ্টিগুণ ও ভেষজ গুণ রয়েছে। মধুকে বলা হয় খাবার, পানীয় ও ওষুধের সেরা। হালকা গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে মধু পান ডায়রিয়ার জন্য ভালো। খাবারে অরুচি, পাকস্থলীর সমস্যা, হেয়ার কন্ডিশনার ও মাউথ ওয়াশ হিসেবে উপকারী।
৩। আঙ্গুর : নবীজী (সাঃ) আঙ্গুর খেতে অত্যন্ত ভাল বাসতেন। আঙ্গুরের পুষ্টিগুণ ও খাদ্যগুণ অপরিসীম। এই খাবারের উচ্চ খাদ্য শক্তির কারণে এটা থেকে আমরা তাত্ক্ষণিক এনার্জি পাই এবং এটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আঙ্গুর কিডনির জন্য উপকারী এবং বাওয়েল মুভমেন্টে সহায়ক। যাদের আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম আছে তারা খেতে পারেন।
৪। দুধ: দুধ- দুধের খাদ্যগুণ, পুষ্টিগুণ ও ভেষজগুণ বর্ণনাতীত। দেড় হাজার বছর আগে বিজ্ঞান যখন অন্ধকারে তখন নবীজী (সাঃ) দুধ সম্পর্কে বলেন, দুধ হার্টের জন্য ভালো। দুধ পানে মেরুদন্ড সবল হয়, মস্তিষ্ক সুগঠিত হয় এবং দৃষ্টিশক্তি ও স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়। আজকের বিজ্ঞানীরাও দুধকে আদর্শ খাবার হিসেবে দেখেন এবং এর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি অস্থিগঠনে সহায়ক।
৫। ফল : যে সমস্ত ফল এবং সবজিতে বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, তা মস্তিষ্কের পক্ষে খুবই ভালো। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ব্লুবেরি ও স্ট্রবেরিতে থাকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মনোযোগ এবং শর্ট টার্ম মেমরি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৬। ডিম : ডিমে প্রচুর পরিমাণে কোলিন থাকে যা শরীরে নিউরোট্রান্সমিটার অ্যাসিটিলকোলিন তৈরি করতে সাহায্য করে। শরীরে যদি সঠিক পরিমাণে অ্যাসিটিলকোলিন তৈরি না হয় তাহলে, কোনও কিছু মনে রাখতে অসুবিধা হতে পারে। ডিমে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড থাকে যা বাচ্চার মস্তিষ্কের পক্ষে খুবই ভলো।
৭। বার্লি (জাউ) : এটা জ্বরের জন্য এবং পেটের পীড়ায় উপকারী।
৮। খেজুর : খেজুরের গুণাগুণ ও খাদ্যশক্তি অপরিসীম। খেজুরের খাদ্যশক্তি ও খনিজ লবণের উপাদান শরীর সতেজ রাখে। নবীজী (সাঃ) বলতেন, যে বাড়ীতে খেজুর নেই সে বাড়ীতে কোন খাবার নেই। এমনকি সন্তান প্রসবের পর প্রসূতি মাকে খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আল্লাহর নবী।
৯। ফিগস বা ডুমুর : ডুমুর অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ভেষজগুণ সম্পন্ন যাদের পাইলস ও কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তাদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী খাবার।
১০। বাদাম : আমন্ড বা যেকোনো বাদামে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। তবে বিশেষ করে কাজু বাদামে থাকে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড। তাই সন্তানকে বাদাম খাওয়াতে ভুলবেন না।
১১। মাছ : মাছে আছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড এবং ডিএইচএ। বহু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে খাবারে কম পরিমাণে ডিএইচএ থাকলে স্মৃতিশক্তি ও বুদ্ধিজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
১২। তরমুজ- সব ধরনের তরমুজ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। নবীজী (সাঃ) তরমুজ আহারকে গুরুত্ব দিতেন। যেসব গর্ভবতী মায়েরা তরমুজ আহার করেন তাদের সন্তান প্রসব সহজ হয়। তরমুজের পুষ্টি, খাদ্য ও ভেষজগুণ এখন সর্বজনবিদিত ও বৈজ্ঞানিক সত্য।
মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা) উপরে বর্ণিত খাবারগুলো ভীষণ পছন্দ করতেন এবং এই ধরণের খাবরগুলো খেলে স্মৃতিশক্তি যে বাড়ে তা আধুনিক যুগের বিজ্ঞানও প্রমান করেছে।