দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯ জুন: মিয়ানমারের জলসীমায় উদ্ধার হওয়া ৩৭ বাংলাদেশিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে-বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ ও সীমান্ত রক্ষা বাহিনী।শুক্রবার সকাল ১০টায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের বিপরীতে মিয়ানমারের ঢেকুবনিয়া সীমান্তে বিজিবির সঙ্গে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক করে।এর পরে দুপুর বারোটায় সাগর থেকে উদ্ধার হওয়াদের পরিচয় সনাক্ত শেষে ৩৭ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। ঘুমধুম সীমান্ত হয়ে তাদের কক্সবাজার নিয়ে আসা হচ্ছে।এর আগে, গত ২১ মে মিয়ানমার উপকূলে পাচারকারীদের একটি নৌযান থেকে ২০৮ জনকে উদ্ধার করে সেদেশের নৌবাহিনী। এর মধ্যে দেড়শ’ জনের পরিচয় যাচাই শেষে গত ৮ জুন তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনে বিজিবি। বাকি ৫৮ জনের মধ্যে ৩৭ জনের জাতীয়তা সম্পর্কে মঙ্গলবার নিশ্চিত হয় দুই দেশ ।শুক্রবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের বিপরীতে সীমান্তের মিয়ানমার অংশে পতাকা বৈঠকের পর তাদের বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী।বিজিবি ১৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম জানান, এই ৩৭ জনের মধ্যে হবিগঞ্জের ১১ জন, কিশোরগঞ্জের আটজন, বগুড়ার সাতজন, সিরাজগঞ্জের পাঁচজন, সুনামগঞ্জের চারজন এবং মাদারীপুর ও জামালপুরের একজন করে রয়েছেন।সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আনার পর ঘুমধুম থেকে বাসে করে তাদের কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের কক্সবাজার জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার সাইফুল জানান।
ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থা নেবে জেলা প্রশাসন।পতাকা বৈঠকে ১০ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিজিবি ১৭ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর ইমরান উল্লাহ সরকার। মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগের সহকারী পরিচালক চ নাইং।গত ২১ মে মিয়ানমার উপকূলে পাচারকারীদের একটি নৌকা থেকে ২০৮ জনকে উদ্ধারের পর এর মধ্যে ২০০ জন বাংলাদেশি রয়েছে বলে দাবি করে মিয়ানমার। এর মধ্যে ১৫০ জনের পরিচয় যাচাই করে গত ৮ জুন তাদের দেশে ফিরিয়ে আনে বিজিবি।পরে আরও ৩৭ জনের জাতীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তাদেরও ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে ২০৮ জনের মধ্যে দুই দফায় ১৮৭ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হল।গত ২৯ মে মিয়ানমারের জলসীমায় পাচারকারীদের আরেকটি নৌকা থেকে ৭২৭ জনকে উদ্ধার করে দেশটির নৌ-বাহিনী, যাদের রোহিঙ্গা ও বাঙালি পরিচয় দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম।