Rajshahi Tanor Bank Crime News 19-6-15

দৈনিকবার্তা-রাজশাহী, ১৯ জুন: রাজশাহীর তানোর শাখায় প্রায় কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। ব্যাংকের ওই শাখার তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) শাখার এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এই অর্থ লোপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার পর নাজির হোসেন ওরফে সোহেল নামের ওই আইটি কর্মকর্তা ১৫ দিনের ছুটির দরখাস্ত দিয়ে আত্মগোপন করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ব্যাংকের একাধিক সূত্র।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের জুন মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের শেরাটন হোটেল (বর্তমান ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল হিসেবে আবার শুরু করার অপেক্ষায়) শাখা থেকে হলমার্ক নামের একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেয়। তানোর সোনালী ব্যাংক শাখা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর ধরে এই শাখায় আইটি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নাজির হোসেন। এ সময়ের মধ্যে তিনি ওই শাখার অভ্যন্তরীণ তহবিলের হিসাব থেকে প্রায় কোটি টাকা লোপাট করেছেন। বিষয়টি এত দিন ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত ২৪ মে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা শুরু হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে প্রায় কোটি টাকা লোপাটের বিষয়টি ধরা পড়ে।

ব্যাংক সূত্রে আরো জানা গেছে, প্রাথমিক তদন্তে ৫০ লাখ টাকার ওপরে লোপাটের প্রমাণ মেলে। এরপর আস্তে আস্তে লোপাটের অঙ্ক বাড়তে থাকে। নিরীক্ষার এই পর্যায়ে লোপাট করা অর্থের পরিমাণ প্রায় কোটি টাকা বলে জানা গেছে। তবে এখনো নিরীক্ষা শেষ না হওয়ায় লোপাট অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এদিকে টাকা লোপাটের বিষয়টি ধরা পড়ার পরপরই আইটি কর্মকর্তা নাজির হোসেন আত্মগোপনে চলে যান। কয়েক দিন পরে তিনি ১৫ দিনের একটি ছুটির দরখাস্ত পাঠিয়ে দেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমানের কাছে। তবে এখনো তাঁর ছুটি অনুমোদন করা হয়নি।

শাখা ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেন,’এখনো নিরীক্ষাকাজ শেষ হয়নি। কাজেই কত টাকা লোপাট হয়েছে তা বলা যাচ্ছে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে সেটি অনেক টাকা হবে।’ আইটি কর্মকর্তা নাজির হোসেনের আত্মগোপন বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ব্যবস্থাপক বলেন, ‘তিনি কদিন ধরে অফিসে আসছেন না। তবে একটি ছুটির দরখাস্ত দিয়েছেন। যেটি এখনো অনুমোদন হয়নি।’ নিরীক্ষা প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরই ওই শাখা থেকে কত টাকা লোপাট হয়েছে সেটি জানা যাবে জানিয়ে শাখা ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেন, প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইটি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না।’
স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে, টাকা লোপাটের মূল হোতা নাজির হোসেন ওরফে সোহেলের বাড়ি রাজশাহী নগরীর বহরমপুর ব্যাংকপাড়া এলাকায়। তিনি ওই টাকা হাতিয়ে নিয়ে সম্প্রতি মাসুদ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করেছেন। এ ছাড়া তিনি একটি ট্রাক ও একটি প্রাইভেট কার কেনেন সম্প্রতি।
এই অভিযোগ বিষয়ে কথা বলার জন্য নাজির হোসেনের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।