দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৭ জুন: নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন,যারা নদী দুষণ ও দখল করেছে তারা এ যুগের দালাল ও রাজাকার।তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি নদী রক্ষার জন্য একজন সৈনিক হিসেবে কাজ করে যাবো। নদীর দু’পাড় রক্ষা ও দুষণের হাত থেকে রক্ষা করতে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।মন্ত্রী বুধবার সেগুন বাগিচার গণপূর্ত ভবন অডিটোরিয়ামে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আয়োজিত ‘ঢাকার চার পাশের নদী রক্ষার কৌশল উদ্ভাবন ও আশু করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
কমিশনের স্লোগান হচ্ছে ‘বাঁচাও নদীÑ বাঁচাও দেশ’।জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মো. আতাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রফিকুল ইসলাম ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. আলাউদ্দিন।সেমিনারটি দুই পর্বে বিভক্ত ছিল। প্রথম পর্বে ছিল উদ্বোধনী পর্ব ও দ্বিতীয় পর্বে ছিল মূল পর্ব। মূল পর্বে দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। ‘তুরাগ ও বুড়িগঙ্গা নদী’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (আইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর এম মোজাম্মেমল হক ও ‘বালু ও শীতলক্ষ্যা নদী’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপণ করেন ঢাকার আইডব্লিউএম-এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. এম মনোয়ার হোসেন।
মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, আমাদের স্লোগান নদী বাঁচাওÑ দেশ বাঁচাও। নদীকে বঙ্গবন্ধু ভালোবাসতেন বলেই তিনি স্লোগান দিয়েছিলেন তোমার আমার ঠিকানাÑ পদ্মা, মেঘনা, যমুনা।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে রক্ষা করার জন্য জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন গঠন করেছেন।মন্ত্রী বলেন, এ সরকারের আমলে ১৪টি ড্রেজার সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ব্যক্তিগত মালিকানায় ২৬টি ড্রেজার সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃত প্রায় মংলাবন্দরে প্রাণের স্পন্দন ফিরিয়ে দেয়া হয়েছ্।েতিনি বলেন, জোট সরকারের আমলে মংলা বন্দরে আমরা পেয়েছি ১১ লাখ টাকা লোকসান। আর এ সরকারের আমলে গতবছর ৬০ কোটি টাকা লাভ হয়েছে। মংলা বন্দরের জন্য ২টি ড্রেজার ক্রয় করা হয়েছে। এখন সেখান দিয়ে বড় বড় জাহাজ চলাচল করছে।
মন্ত্রী বলেন, ১১ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে আমরা দেশের ৫৩টি নদী খননের ব্যবস্থা নিয়েছি। ড্রেজারের অভাবে এ খনন কাজ করা যাচ্ছেনা। খুব শিগগ্রই আরো ড্রেজার সংগ্রহ করে কাজ শুরু করা হবে।তিনি বলেন, মাওয়া থেকে বরিশাল যেতে আগে ৩ ঘন্টা সময় লাগতো। এমনকি ঈেেদর সময় মানুষ মাওয়া ঘাটে নামাজ আদায় করতো। এখন চর পড়া নদী খননের ফলে সোয়া ঘন্টা পদ্মা নদী পেরুতে লাগে। অপর দিকে ঘাসিয়া খালি চ্যানেলে ড্রেজিং করে জুন মাসে চালু করার কথা। ইতিমধ্যে ঘসিয়া খালি থেকে জাহাজ চলাচল শুরু করেছে। হাজারীবাগের ট্যানারী থেকে নদী দুষণ হয়।
সেখান থেকে ট্যানারী স্থানান্তরের ব্যবস্থা খুব শিগগ্ই নেয়া হবে। সেখানে একটি সেন্ট্রাল ইটিপির করা হবে। যা পানি দুষণ মুক্ত করা হবে।মন্ত্রী বলেন, ঢাকার ওয়াসার খালগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও সংস্কারের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি খাল সংস্খার করা হয়েছে। এর সুফল জনগণ পাচ্ছে। উদ্ধার ও সংস্কার কার্যক্রম চলমান থাকবে। শুধু ঢাকা নয়Ñ টাস্কফোর্স পাবনার বড়াল নদসহ বিভিন্ন নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দুষণ রোধে কাজ করে যাচ্ছে। সেমিনারের দ্বিতীয় পর্বের প্রবন্ধের সুপারিশে বলা হয়, নদীর তীর ভূমির মালিকানা বিআইডব্লিউটিএকে প্রদান,নদীর দখল ও দুষণরোধকল্পে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রদান, নদী রক্ষা ইউনিট তৈরী, প্রভৃতি।