দৈনিকবার্তা-যশোর, ১৭ জুন: বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার বলেছেন, বিমান বাহিনী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি দেশ ও জাতির যেকোনো প্রয়োজনে ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, একটি স্বাধীন জাতির বিমান বাহিনীর মূল দায়িত্ব হচ্ছে দেশের আকাশসীমার পতিরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।বুধবার সকালে বিমান বাহিনী একাডেমিতে অনুষ্ঠিত গ্রীষ্মকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৭১তম ফ্লাইট ক্যাডেট কোর্স ও ডিরেক্ট এন্ট্রি ২০১৫/এ অফিসার ক্যাডেট কোর্সের কমিশন প্রাপ্তি উপলক্ষে যশোরে অবস্থিত বিএএফ একাডেমির প্যারেড স্কোয়ারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।বিমান বাহিনী প্রধান ফ্লাইট ক্যাডেট ও অফিসার ক্যাডেটদের মধ্যে পদক, সনদপত্র ও ফ্লাইং ব্যাজ বিতরণ করেন। ফ্লাইট ক্যাডেট উইং আন্ডার অফিসার আদিব আদনান নীল সেরা চৌকস কৃতিত্বের জন্য সোর্ড অব অনার এবং উড্ডয়ন প্রশিক্ষণে সেরা কৃতিত্বের জন্য ‘বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ট্রফি’ লাভ করেন।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৭১তম ফ্লাইট ক্যাডেট কোর্স ও ডিরেক্ট এন্ট্রি-২০১৫ অফিসার ক্যাডেট কোর্সের কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের গ্রীষ্মকালীন গ্র্যাজুয়েশন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০১৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।যশোরের বিএএফ একাডেমির প্যারেড স্কোয়ারে এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। তিনি ফ্লাইট ক্যাডেট ও অফিসার ক্যাডেটগণদের মাঝে পদক, সনদপত্র এবং ফ্লাইং ব্যাজ বিতরণ করেন।ফ্লাইট ক্যাডেট উইং আন্ডার অফিসার আদিব আদনান নীল, ৭১তম ফ্লাইট ক্যাডেট কোর্সে সেরা চৌকস কৃতিত্বের জন্য সোর্ড অব অনার’ এবং উড্ডয়ন প্রশিক্ষণে সেরা কৃতিত্বের জন্য ‘বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ট্রফি’ লাভ করেন। ফ্লাইট ক্যাডেট সার্জেন্ট মোঃ ইমতিয়াজ আহম্মেদ, জেনারেল সার্ভিস প্রশিক্ষণে সেরা কৃতিত্বের জন্য ‘কমান্ড্যান্ট ট্রফি’ এবং ৭১তম ফ্লাইট ক্যাডেট কোর্সে (গ্রাউন্ড ব্রাঞ্চ) সেরা কৃতিত্বের জন্য ফ্লাইট ক্যাডেট সার্জেন্ট সায়মা মোশারফ ‘বিমান বাহিনী প্রধান’এর ট্রফি লাভ করেন।
অনুষ্ঠানে দুইজন জিডি (এন) শাখার কর্মকর্তাকে নেভিগেশন ব্যাজ প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০১৫ (সামার টার্ম) এ ১নং স্কোয়াড্রন চ্যাম্পিয়ন বিবেচিত হয়ে একাডেমি পতাকা লাভ করে। উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২ জন কর্মকর্তাকে বিমান বাহিনী একাডেমী থেকে উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ শেষে ফ্লাইং ব্যাজ প্রদান করা হয়।
বিমান বাহিনী প্রধান তাঁর বক্তৃতায় প্রশিক্ষণোত্তীর্ণ ফ্লাইট ক্যাডেট ও অফিসার ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে বলেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়া এখন সময়ের দাবি এবং তোমরাই হবে তার অগ্রদূত।তিনি বলেন, একবিংশ শতকের অঙ্গীকার ও প্রত্যয়কে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় বিমান বাহিনীতে প্রণীত হয়েছে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা ফোর্সেস গোল-২০৩০। এরই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে বিমান বাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে বিভিন্ন অত্যাধুনিক আকাশযান ও বিভিন্ন ধরনের আকাশ প্রতিরক্ষা র্যাডার।
বিমান বাহিনী প্রধান বলেন, এ সকল সংযোজনের ফলে বিমান বাহিনীকে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি কার্যকর, দক্ষ ও আধুনিক বাহিনী হিসেবে অনেক দূর নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে শুধুমাত্র এর সর্বোত্তম ব্যবহার ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে।তিনি বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ গ্রহণকালে তারা যা শিখেছ, তা বাস্তবে প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের ঐতিহ্যবাহী একাডেমির সুনামও অক্ষুণœ রাখবে বলে তিনি আশাবাদী।এ কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে ১৩ জন মহিলা ক্যাডেটসহ মোট ৩১ জন ফ্লাইট ক্যাডেট ও অফিসার ক্যাডেট কমিশন লাভ করে। ফ্লাইট ক্যাডেট উইং আন্ডার অফিসার আদিব আদনান নীল আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ পরিচালনা করেন। কুচকাওয়াজ শেষে বিমান বাহিনী একাডেমির সকল প্রকারের প্রশিক্ষণ বিমানের সমন্বয়ে এক আকর্ষণীয় ফ্লাইপাস্ট অনুষ্ঠিত হয়।এর আগে প্যারেড স্কোয়ারে এসে উপস্থিত হলে বিমান বাহিনী প্রধানকে বিমান বাহিনী একাডেমির কমান্ড্যান্ট এয়ার কমডোর মো. শফিকুল আলম স্বাগত জানান।অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকগণ, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আমন্ত্রিত বেসামরিক কর্মকর্তা এবং কমিশনপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের অভিভাবকবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।