saka

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৬ জুন: মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি মঙ্গলবার হয়। পরে মামলার আপিলের শুনানি বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আদালত।মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এটি আপিল আদালতে আসা যুদ্ধাপরাধের পঞ্চম মামলা, যার উপর শুনানি শুরু হল।

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে আদালতে শুনানি শুরু করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকট খন্দকার মাহবুব হোসেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।পরে আদালতে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে আপিল বিভাগে এ মামলার পেপারবুক পড়া শুরু করেন অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান হোসেন। কিছুক্ষণ শুনানির পর আদালত বিরতি দেন।২০১৩ সালরে ২৯ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দনি কাদের চৌধুরীর মামলায় খালাস চেয়ে আপিল করেন। আপিল আবেদনে মোট ১ হাজার ৩শ’ ২৩ পৃষ্ঠার নথিপত্রে বিভিন্ন ডকুমেন্টসহ ২৭টি গ্রাউন্ড রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। যার আপিল নম্বর হচ্ছে ১২২/১৩।মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১১টা থেকে শুরু হয়ে মাঝে আধঘণ্টা বিরতি দিয়ে সোয়া ১টা পর্যন্ত শুনানি চলে।এসএম শাহজাহান পরে বলেন, পেপারবুক থেকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনা অভিযোগগুলো পড়ে শোনানো হয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী সিরাজুল ইসলামের জবানবন্দির ও জেরা উপস্থাপন শেষ হয়েছে।

বুধবারও এ মামলার শুনানি চলবে বলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক জানান।রাউজানে কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের মালিক নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যা, সুলতানপুর ও ঊনসত্তরপাড়ায় হিন্দু বসতিতে গণহত্যা এবং হাটহাজারীর এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ছেলেকে অপহরণ করে খুনের দায়ে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় দেয়।এছাড়া হত্যা, গণহত্যার পরিকল্পনা সহযোগিতা এবং লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও দেশান্তরে বাধ্য করার মতো তিনটি অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্যকে ২০ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। অপহরণ ও নির্যাতনের দুটি ঘটনায় তাকে দেয়া হয় পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড।রায়ে বলা হয়, প্রসিকিউশন তার বিরুদ্ধে ২৩টি অভিযোগ এনেছে, তার মধ্যে নয়টি (২ থেকে ৮, ১৭ ও ১৮ নম্বর অভিযোগ) সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
১, ১০, ১১, ১২, ১৪, ১৯, ২০ ও ২৩ নম্বর অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেনি।আর প্রসিকিউশন শুনানির সময় কোনো সাক্ষী হাজির করতে না পারায় ৯, ১৩, ১৫, ১৬, ২১ ও ২২ নম্বর অভিযোগের মূল্যায়ন করেনি ট্রাইব্যুনাল।সকল দণ্ড থেকে বেকসুর খালাস চেয়ে ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।