jaforwe

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৬ জুন: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননায় ট্রাইব্যুনালের দেয়া ৫ হাজার টাকা জরিমানা ৫ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করা একটি আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে মঙ্গলবার চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এই আদেশ দেন।আদালতে জাফরুল্লাহর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আখতার ইমাম। তার সঙ্গে ছিলেন রাশনা ইমাম ও রেশাদ ইমাম। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।

জাফরুল্লাহর আবেদনটি ওইদিন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়েছে।সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করা একটি আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি করে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।রাশনা ইমাম বলেন, সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে সম্পূর্ণ ন্যায়বিচারের স্বার্থে এ আবেদন করা হয়।অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আদালত জরিমানা স্থগিত করে আবেদনটি নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছে।ব্রিটিশ নাগরিক ডেভিড বার্গম্যানের সাজায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবমাননাকর বিবৃতি দেওয়ায় গত ১০ জুন জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সাজা দেয় আদালত।

শাস্তি হিসাবে তাকে এক ঘণ্টা আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। সেইসঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, যা সাত দিনের মধ্যে না দিলে তাকে একমাস জেল খাটতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক।ওই সাত দিন সময় শেষ হওয়ার ঠিক আগের দিন জাফরুল্লাহর আইনজীবীরা এই আবেদন করেন।ব্লগে দায়িত্বজ্ঞানহীন লেখার মাধ্যমে বিচারাধীন বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর দায়ে সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানকে গতবছর ২ ডিসেম্বর সাজা দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করে ৫০ জন নাগরিকের একটি বিবৃতি একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়।

ওই বিবৃতি বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রতি কটাক্ষ মনে হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল বিবৃতিদাতাদের আচরণের ব্যাখ্যা চায়।৫০ বিবৃতিদাতার মধ্যে ২৬ জন নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান। আর একজন আগেই বিবৃতি থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন।বাকি ২৩ জনের বিরুদ্ধে গত ১ এপ্রিল অবমাননার রুল জারি করে ট্রাইব্যুনাল-২। ১৪ মে ওই ২৩ জনের দেওয়া জবাবের ওপর শুনানি করে আদালত রায়ের দিন ঠিক করে দেন।এর মধ্যে ২২ জনকে প্রথমবারের মতো এ ধরনের আচরণ করায়’ সতর্ক করে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় রায়ে। কিন্তু এর আগেও একটি ঘটনায় অবমাননার অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সতর্ক করে দিয়েছিল বলে এবার তাকে সাজা দেন বিচারক।

আদেশের পর জাফরুল্লাহ চৌধুরী রায়ের অনুলিপি হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কাঠগড়ায় যাবেন না বলে দীর্ঘসময় অনড় থাকেন। পরে রায়ের কপি হাতে দেওয়া হলে স্বেচ্ছায় কাঠগড়ায় গিয়ে সাজাভোগ করেন এবং পরে আদালতের বাইরে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হনঅসে সময় তিনি বলেন, আজকের আদালত অবমাননার রায়টা তিনজন বিচারকের মানসিক অসুস্থতার প্রমাণ। তিনজন বিচারপতির মানসিক অসুস্থতার প্রমাণ। যেখানে বিচারপতিরা সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না, সেখানে ন্যায়বিচার হয় না।যখন তারা সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না, তখন যুক্তি থাকে না বলেই তারা আইনের আড়ালে আত্মগোপন করেন। এখানে এই মামলাটার বোঝার বিষয় আছে। আদালত অবমাননার মামলায় তিনটির একটি বিষয় প্রমাণ করতে হয়।

স্ক্যান্ডালাইজিং দ্য কোর্ট,কোর্টের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা,অবস্ট্রাকশন অব দ্য অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব দ্য জাস্টিস,বিচারের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা, আদালতের ডিগনিটি ক্ষুণ্ন করা।আদেশের সময় এজলাসকক্ষে অভিযুক্তদের দাঁড় করিয়ে রাখাটা অভদ্রতা মন্তব্য করে জাফরুল্লাহ বলেন, যখন রায় পড়েন তখন সকল অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দাঁড় করিয়ে রাখা অর্থহীন। এটা প্রাগৈতিহাসিক, মধ্যযুগীয় ঘটনা। কিন্তু তারা দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। তারপর বলেছেন বয়স, কিন্তু বয়সের সম্মান আমি তাদের কাছে কামনা করি না।