Kurigram_Flood1434431925-685x320

দৈনিকবার্তা-কুড়িগ্রাম, ১৬ জুন: কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তাসহ সবকটি নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।তবে নিম্নাঞ্চল থেকে দ্রুত পানি নেমে না যাওয়ায় ও রাস্তা-ঘাট তলিয়ে থাকায় দুর্ভোগ কমেনি ছয় উপজেলার ৩০ হাজার বন্যাকবলিত মানুষের। গত ছয়দিন ধরে বানভাসি পরিবারগুলো পানিবন্দি অবস্থায় রান্না করতে না পারায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবারের সংকট। আর বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট তো আছেই। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট।

সদর উপজেলার পার্বতীপুর চরের দিনমজুর আফজাল হোসেন জানান, পানি কমছে কিন্তু হাতে কাজ নাই। ঘরে খাবারও নাই। ছয়দিন ধরে বাড়িতে খেয়ে না খেয়ে অসহায় অবস্থায় পড়ে আছেন। মেম্বার চেয়ারম্যান কোনো খবর নেয় না। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, বন্যাকবলিত পরিবারগুলোর জন্য ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা এখনও হাতে পাওয়া যায়নি। হাতে পেলে বিতরণ করা হবে। এদিকে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক এবিএম আজাদ জানান, বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আরো বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার, নুন খাওয়া পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৫৭ সেন্টিমিটার এবং ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে, কুড়িগ্রামের উলিপুরে ৭৫০ এতিম পরিবারের মাঝে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে পরিবার প্রতি ২৫ কেজি মিনিকেট চাল, ৩ কেজি মুসুর ডাল, ২.৫ কেজি ছোলা, ২.৫ কেজি চিনি এবং ২.৫ লিটার সয়াবিন তেল বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ হাতিয়া, ধরনীবাড়ী, দলদলিয়া, পান্ডুল, দূর্গাপুর ও বুড়াবুড়ী ইউনিয়নের এসব অসহায় এতিম পরিবার প্রধানের হাতে এ খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট তুলে দেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানরা। খাদ্য সামগ্রী বিতরণকালে উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ হায়দার আলী মিঞা, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহমিনা বেগম রুবী ও ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ এর কান্ট্রি অফিসের হিউম্যানিটারিয়ান কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোঃ ইকবাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

রমজানের কর্মসূচিতে এ খাদ্য দ্রব্য মুসলিম অসহায় পরিবার ছাড়াও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী পরিবারের মাঝেও বিতরণ করা হয়। ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ’র আলো-আইআরইউকে প্রকল্পের জেলা প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, জেলার উলিপুর উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে মোট ৭৫০ টি এতিম পরিবার নির্বাচন করে এ ধরনের সহযোগিতা ছাড়াও শিশুদের শিক্ষা সহায়তা এবং জীবন যাত্রার মান স্থায়ীভাবে উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণসহ আর্থিক অনুদান অব্যাহত থাকবে।