দৈনিকবার্তা-সিলেট, ১৫ জুন: মুক্তমনা লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাস হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দৈনিক সবুজ সিলেট ও সংবাদের ফটো সাংবাদিক ইদ্রিস আলীর ৭ দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। রিমান্ড শেষে সোমবার দুপুরে তাকে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে হাজির করা হলে বিচারক ফারহানা হক তাকে কারাগারে পাঠানোর নিদের্শ দেন।আদালতের জিআর বিজয় রায় এ তথ্য জানিয়েছেন।তিনি জানান, অনন্ত হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি ইন্সপেক্টর আরমান আলী আজ ইদ্রিসকে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে তোলেন। লিখিতবক্তব্যে তিনি বলেন, ৭ দিনের রিমান্ডে ইদ্রিসের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করতে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের একটি টিম সিলেটে তদন্ত করছে। পরবর্তীতে তদন্তের ব্যাপারে আদালতকে অবগত করা হবে।তিনি আরো বলেন, মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে তোলা হলে আদালতের বিচারক ফারহানা হক তাকে জেল-হাজতে পাঠানোর নিদের্শ দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৭ দিনের রিমান্ডে ইদ্রিস আলীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইদ্রিস বেশ তথ্য দেন। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই ও এর সূত্র ধরে তদন্ত চলছে।সিআইডি সূত্র জানায়- ইদ্রিসের দেয়া তথ্যে অনেক সময় মনে হয়েছে, সে কাউকে ফাঁসাতে চাচ্ছে, আবার অনেক সময় মনে হচ্ছে সে নিজেকে রক্ষা করতেই নানা কথা বলছে। তবে ৭ দিনের রিমান্ডে ইদ্রিস অনেক তথ্য দিলেও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর জন্য এসব তথ্য যথেষ্ট নয় বলে সিআইডি কর্মকর্তারা মনে করছেন।গত ৭ জুন রাতে ইদ্রিসকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে পরদিন আদালতে হাজির করে তার ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। ওইদিনই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকায় সিআইডি সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়।
গত ১২ মে সিলেট নগরীর সুবিদবাজারে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে অনন্তকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ছাতকের ঝাউয়াবাজারের পূবালী ব্যাংকের শাখার কর্মকর্তা অনন্ত ওইদিন অফিসে যাওয়ার জন্যই বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন। কয়েক’শ গজ যাওয়ার পর ৪ জন ঘাতক তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। প্রকাশ্য দিবালোকে এমন হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সিলেটসহ সারাদেশে।মাস তিনেকের ব্যবধানে বাংলাদেশে সমমনা তিন ব্লগার- অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর ওয়াশিকুর রহমান বাবু ও অনন্ত বিজয় দাশ- হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ এসেছে দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহল থেকেও। তবে এসব ঘটনার কোনটির তদন্তেই পুলিশ এখনো সফলতার মুখ দেখেনি।