দৈনিকবার্তা-গৌরনদী (বরিশাল), ১৫ জুন: ঘটনার সময় বিদেশে কর্মরত থাকা সত্বেও জেলার গৌরনদী উপজেলার কটকস্থল গ্রামের দেলোয়ার আকন নামের এক যুবককে বিএনপি-জামায়াতের টানাঅবরোধ চলাকালীন সময়ের নাশকতা মামলায় জড়িয়ে আদালতে চার্জশীট প্রদান করেছে পুলিশ। এতে cহচ্ছেন ওই যুবক ও তার পরিবারের সদস্যরা। এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে গৌরনদী থানার ওসি সহ দু’পুলিশ অফিসারের দায়িত্বহীনতার ভূমিকা নিয়ে। দেলোয়ার আকন কটকস্থল গ্রামের মৃত আঃ জলিল আকনের পুত্র।
জানা গেছে, ২০ দলীয় জোটের অবরোধ চলাকালীন গত ২৯ জানুয়ারি গভীর রাতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদীর কটকস্থল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি লবনবাহী ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করে অজ্ঞানামা দুস্কৃতকারীরা। এ ঘটনায় গৌরনদী থানার এস.আই স্বপন কুমার হাওলাদার বাদি হয়ে ৩০ জানুয়ারি সকালে ওই এলাকার ৯ জনের নাম উল্লেখসহ ১০/১৫ জনকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওইসময় দেলোয়ার আকন মধ্যপ্রাচ্যের কাতারে গাড়ীর ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত থাকা সত্বেও তাকে ওই মামলায় ৩ নাম্বার আসামি করা হয়।
সূত্রমতে থানার ওসি মো. সাজ্জাদ হোসেন এ মামলার তদন্ত অফিসার হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন এস.আই জুবায়ের হোসেনকে। তিনি (জুবায়ের) তদন্ত না করেই দেলোয়ার আকনকে দোষী সাব্যাস্ত করে তড়িঘড়ি করে গত একমাস পূর্বে দেলোয়ারের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। গত ২৫ মে দেলোয়ার দেশে ফিরে মামলার খবর জানতে পারেন। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হওয়ায় তিনি এখনও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ফলে বিপাকে পড়েছেন দেলোয়ার ও তার পরিবারের সদস্যরা। আত্মগোপনে থেকে দেলোয়ার ও অন্যান্য আসামিরা মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, তারা নির্দোষ হওয়া সত্বেও থানার ওসি এবং এস.আইদের দাবিকৃত উৎকোচের মোটা অংকের টাকা দিতে না পাড়ায় তাদের মামলায় জড়িয়ে আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হয়েছে। এ মামলাকে পুঁজি করে ওইসব কর্মকর্তারা অর্থ-বানিজ্য শুরু করেছেন বলেও তারা অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদি এস.আই স্বপন কুমার হাওলাদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভুলক্রমে দেলোয়ার আকনকে আসামি করা হয়েছে। তার নাম মামলার আইও চার্জশীট থেকে বাদ দিতে পারতেন। মামলার তদন্তকারী অফিসার এস.আই জুবায়ের হোসেন জানান, আমি তড়িঘড়ি করে চার্জশীট প্রদান করেছি। দেলোয়ার আকন বিদেশে ছিলো এটা আমার জানাছিলোনা। তবে উভয় পুলিশ কর্মকর্তা ্আর্থিক সুবিধা গ্রহনের অভিযোগ অস্বীকার করেন। থানার
ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, দেলোয়ার আকন ঘটনার সময় বিদেশে অবস্থান করে থাকলে সম্পুরক চার্জশীটের মাধ্যমে তার নাম বাদ দেয়া হবে। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, কটকস্থলে লবনবাহী ট্রাকে অগ্নিসংযোগের মাত্র তিনদিন পর গত ২ জানুয়ারি ঘটনাস্থল থেকে মাত্র কয়েক’শ গজ দূরত্বের বেজগাতি নামকস্থানে অন্য একটি পণ্যবাহী ট্রাকে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। এতে ট্রাক ড্রাইভার নুর হোসেন ও হেলপাড় জাফর রাঢ়ী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। পুরো ঘটনাটি আড়াল করতে ওসি সাজ্জাদ হোসেন বিষয়টিকে সড়ক দুর্ঘটনা বলে প্রচার করে। ওই ঘটনায় তিনি (ওসি) কোন মামলা পর্যন্ত দায়ের করেননি।