দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৪ জুনঃ প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর চেয়ারম্যান, দৈনিক ইত্তেফাকের উপদেষ্টা সম্পাদক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মিলনের প্রথম নামাজে জানাজা বাদ জোহর জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছে৷রোববার রাত তিনটায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তিনি ইনত্মেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজীউন)৷তিনি দীর্ঘদিন যাবত কিডনি ও ফুসফুসে জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন৷ জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রবীণ এই সদস্যের বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর৷
রোববার দুপুর ১২টার দিকে হাবিবুর রহমান মিলনের লাশ জাতীয় প্রেস ক্লাবে আনা হলে সেখানে এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়৷ বাদ জোহর মরহুমের দীর্ঘদিনের চেনা স্থান জাতীয় প্রেস ক্লাবে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়৷হাবিবুর রহমান মিলনের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করে শোক-সনত্মপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন৷
নামাজে জানাজায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইমলাম, সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, তথ্য সচিব মরতুজা আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপ ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, সিপিবি-এর সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের (বিএফইউজে) সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল ও মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূইয়া, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরম্নজ্জামান, বিএফইউজে অপরাংশের সভাপতি শওকত মাহমুদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী, পিআইবির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক আবদুস সালাম, ডেফোডিল ইউনিভার্সিটির প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান, প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচরিপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আলতাফ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ প্রমুখ নামাজে জানাজায় শরীক হন৷এছাড়া জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার সাহা, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, জাতীয় প্রেস ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ কাত্তিক চ্যাটার্জিসহ অন্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন৷
জানাজার আগে মরহমের স্মৃতিচারণা করে বক্তৃতা করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী, বিএফইউজের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল ৷মরহুমের পুত্র তাহমিনুর রহমান সুমন সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন৷জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপিত মুহম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, হাবিবুর রহমান মিলন সাংবাদিকতা ছাড়া জীবনে আর কিছু করেননি৷ সময় পেলেই তিনি প্রেস ক্লাবে আসতেন৷ তিনি অত্যনত্ম ভদ্র ও নরম মনের অধিকারী ছিলেন৷জাতীয় প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, হাবিবুর রহমান মিলনের সাংবাদিকতা জীবন ছিল অত্যনত্ম বর্ণাঢ্য ও কর্মময়৷ জীবনের শেষ দিন পর্যনত্ম তিনি পেশাদারিত্বের সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত থেকে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন৷
নামাজে জানাজার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) মাহবুবুল হক শাকিল ও প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন মরহুমের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান৷ পরে জাতীয় প্রেস ক্লাব, বিএফইউজে, ডিইউজেসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পৰ থেকে ফুল দিয়ে তার স্মৃতির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়৷একুশে পদকপ্রাপ্ত হাবিবুর রহমান মিলন অসুস্থতার কারণে গত ২ জুন হাসপাতালে ভর্তি হন৷ তিনি হৃদরোগ, কিডনি জটিলতাসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন৷ দৈনিক ইত্তেফাকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাবিবুর রহমানের মৃতু্যর পর মরদেহ হাসপাতাল থেকে তার ইস্কাটনের বাসায় আনা হয়৷ সহকর্মীদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রবিবার দুপুরে তার কফিন জাতীয় প্রেসসক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখান থেকে লাশ নেওয়া হয় পিআইবিতে৷ এরপর লাশ নেয়া হয় তার বর্তমান কর্মস্থল দৈনিক ইত্তেফাক কার্যালয়ে৷ পরে মরহুমের লাশ বারডেম হাসপাতালের মরচুয়ারিতে রাখা হয়েছে৷হাবিবুর রহমান মিলনের এক ছেলে পাঁচ মেয়ের মধ্যে এক মেয়ে থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়৷ তিনি দেশে পৌঁছালে সোমবার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে এই সাংবাদিককে দাফন করা হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে৷