দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৪ জুনঃ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে বলেছেন, বন্ধুত্ব ভালো কিন্তু দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নয়। বন্ধুত্ব হতে হবে সমানে সমানে, না হলে তা হবে দাসত্ব। এ সময় সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যমুনা সেতু দিয়ে যেতে বাংলাদেশের জনগণকে টোল দিতে হয়। কিন্তু অন্য অনেক দেশ সেতু ব্যবহার করে টাকা-পয়সা দেবে না, কিছু দেবে না। হেভি হেভি গাড়ি যাবে, টোল দেবে না। এ রাস্তা কি লোড নিতে পারবে? তিনি আরও বলেন, যাতায়াতে বাধা দিচ্ছি না। কিন্তু টাকা দিয়ে যাবে।’রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করার বিরোধিতা করে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, বিদ্যুৎ দরকার। কিন্তু রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হলে সুন্দরবন শেষ হয়ে যাবে। জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি অন্য কোনো জায়গায় এ বিদ্যুৎকেন্দ্র করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, দেশে যে শাসন চলছে তা বাকশালও নয়। দেশে রাজতন্ত্র ও এক পরিবারের শাসন চলছে। দেশের মানুষ ভাত পাক বা না পাক, ওই পরিবারের নিরাপত্তা থাকতেই হবে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় দেশ দিন দিন খারাপের দিকে যাবে।গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে রবিবার রাত ৮টায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম (ময়মনসিংহ) সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় খালেদা জিয়া এ সব কথা বলেন।ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জুডিশিয়াল পুলিশ, র্যাব বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ছাড়া চললে সাধারণ জনগণ তাদের গণধোলাই দিয়ে চ্যাপ্টা করে দিবে তাই তাদের জনগণকে এত ভয়।পুলিশের সমালোচনা করে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, পুলিশ এখন সরকারের চেয়েও বড় হয়ে গেছে। তারা এখন বড় সরকার। পুলিশ বলে, তারাই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে। তাই গুম-খুন অত্যাচার করছে। কিন্তু পুলিশ র্যাব দিয়ে বেশিদিন ক্ষমতায় যায় না।
খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, সরকার অন্যায়ভাবে বিএনপি-সমর্থিত নির্বাচিত মেয়রদের বরখাস্ত করছে। কিন্তু তারা এটা করতে পারে না। তিনি বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রে কোর্টের রায় আমাদের পক্ষে আসার কথা। কিন্তু কোর্টও নিরপেক্ষতা রাখছে না। আমরা চাচ্ছি সুবিচার, তা পাচ্ছি না।’সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পর্কে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, গত ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেওয়া নিয়ে অনেকের মধ্যে দ্বিধা ছিল। কিন্তু সিটি নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে যে, এ সরকারের অধীনে কোনো ধরনের নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে তিনি বলেন, তারা তদন্ত করছে না। তদন্ত করলে চোর ধরা পড়বে।এ সময় দলীয় আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিজেদের মতভেদ ভুলে দলের স্বার্থে কাজ করুন। যে যাই বলুক দল সুসংগঠিত রয়েছে। অতীতে যারা আন্দোলন-সংগ্রামে ছিল এবং যারা দলের জন্য কাজ করেছে তাদের এবার মূল্যায়ন করা হবে।এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ বক্তব্য দেন।এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ময়মনসিংহের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম।