দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৩ জুন: টানা বর্ষণের কারনে চতুর্থ দিনের খেলাও পরিত্যক্ত হলো ফকুল্লা টেস্টের। ব্যাট-বলের চেয়ে বৃষ্টির সঙ্গেই বেশি লড়তে হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারতের ক্রিকেটারদের। দ্বিতীয় দিনে মুষলধারে বৃষ্টির কারণে মাঠে নামতে পারেননি মুশফিক-কোহেলিরা। প্রথম ও তৃতীয় দিনে বৃষ্টির লুকোচুরির মাঝে খেলা হয়েছে ১০৩.৩ ওভার। আর তাতে ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করে ৬ উইকেটে ৪৬২ রান সংগ্রহ করে ভারত। চতুর্থ দিন ভারত ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠায়। বৃষ্টির ফাঁকেই বাংলাদেশ তিন উইকেটে ১০৭ রান সংগ্রহ করে।
এবার মুষলধারে বৃষ্টি। সঙ্গে বিদ্যুতের গর্জন! শেষতক খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা।বৃষ্টির আগ পর্যন্ত ক্রিজে ছিলেন ইমরুল কায়েস ও সাকিব আল হাসান। ব্যক্তিগত ১৯ রানে অশ্বিনের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন তামিম ইকবাল।তামিমের বিদায়ের পর মমিনুলকে নিয়ে ভালোই প্রতিরোধ গড়ে তুলেন ইমরুল কায়েস। ৭৪ বলে অর্ধশতকও তুলে নিয়েছেন তিনি। ব্যক্তিগত ৩০ রান করে হরভাজন সিংকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে যাদবের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন মমিনুল। এরপরের ওভারেই অশ্বিনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ হয়ে ব্যক্তিগত ২ রানে সাজঘরের পথ ধরেন মুশফিকও।
ফতুল্লা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে আগের দিন ৬ উইকেট হারিয়ে ৪৬২ রান তুলে ভারত। সেঞ্চুরি করেছেন ভারতের শেখর ধাওয়ান (১৭৩) ও মুরালি বিজয় (১৫০)। তবে ২ রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন আজিঙ্ক্য রাহানে (৯৮)। চতূর্থ দিনে কোন ব্যাটিং না করে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত।এদিকে, ফতুল্লা টেস্টে বাংলাদেশ ইনিংসে ৩০ রান করে আউট হয়েছেন বাঁ-হাতি ওপেনার মোমিনুল হক। তবে আর মাত্র ২০ রান করতে পারলেই টানা ১২ টেস্টে হাফ-সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্সের পাশে বসার সুযোগ হতো তার। কিন্তু সেটি আর সম্ভব হলো না মোমিনুলের জন্য। এখনো বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস খেলা বাকী। তারপরও সম্ভব হবে কি-না, তার কোন নিশ্চয়তা নেই।তবে মোমিনুলের এমন রেকর্ড হাতছাড়া হওয়ায় বেশ হতাশ হয়েছেন বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল, আমি খুব হতাশ। আমি জানি না মোমিনুল কতটা হতাশ।
আমি ব্যক্তিগতভাবে চেয়েছিলাম, মোমিনুল অর্ধশতক করুক এবং রেকর্ডে নাম লেখাক। কিন্তু বৃষ্টির কারণে এটা বোধদয় সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের দেশের থেকে একজন খেলোয়াড় যদি রেকর্ড বুকে থাকতো তাহলে খুব ভালো হতো।ফতুল্লা টেস্টে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১৯ রান করেছেন তামিম ইকবাল। এই ছোট ইনিংসটি খেলার পথে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশারকে পিছনে ফেলে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্ছ রান সংগ্রহকারী ব্যাটসম্যান হয়েছেন তামিম। এমন অর্জন গড়তে পেরে তামিম নিজেও খুশী।তবে তার এই রেকর্ডটিও কেউ ভেঙ্গে ফেলবে মনে করা তামিম বলেন, ‘আমি মনে করি না রেকর্ডটি খুব বেশিদিন থাকবে। কারণ মোমিনুল যেভাবে খেলছে, তাতে ও (মোমিনুল) আমার রেকর্ডটি খুব তাড়াতাড়িই ভেঙ্গে ফেলবে। আমি সুমন ভাইয়ের ১০ ম্যাচ আগে করেছি। কিন্তু আমার এই রেকর্ডটি ৫-৬ ম্যাচ আগে যে কেউ ভেঙ্গে ফেলবে।
সাবেক অধিনায়ক ও সতীর্থ হাবিবুল বাশারকে টপকিয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী হন তামিম। ফতুল্লার মাঠে এমন অর্জনের পর বাশার নিজে ড্রেসিংরুমে এসে তামিমকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বলে জানান বাংলাদেশের এই বাঁ-হাতি ওপেনার, সুমন ভাই ড্রেসিং রুমে এসেছিলেন। এমন রেকর্ডের জন্য আমাকে অভিন্দন জানিয়েছেন তিনি।৪০ ম্যাচের ৭৭ ইনিংসে ৩০৩৯ রান এখন তামিমের। দ্বিতীয়স্থানে থাকা হাবিবুল বাশারের সংগ্রহ ৫০ ম্যাচের ৯৯ ইনিংসে ৩০২৬ রান।