দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ১৩ জুন: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম কনভোকেশন অনুষ্ঠান আগামী বছরের (২০১৬ সালের) শেষের দিকে, ১ ডিসেম্বর থেকে ক্লাস শুরু এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে ২০১৭ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ আইটিভিত্তিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট চেয়ারম্যান ও ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ। শনিবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের ১৭তম বার্ষিক অধিবেশনে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। অধিবেশনে বার্ষিক রিপোর্ট এবং ১৮১ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার রাজস্ব ও ১৬৭ হাজার ৯৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার উন্নয়ন বাজেট পাস করা হয়েছে।
গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সিনেট হলে অনুষ্ঠিত ওই অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ। এতে মোট ৫০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ভাইস-চ্যান্সেলর তার অভিভাষণে এ পর্যন্ত কার্যকর হওয়া ২৮টি, বাস্তবায়নাধীন ৯টি এবং ভবিষ্যত কর্ম-পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১০টি পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, র্যাংকিংয়ের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করে পুরস্কৃত করা, এস এস সি ও এইচ এস সি’র ফলাফলের ভিত্তিতে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষে আর নয় বরং ভর্তি কার্যক্রম এগিয়ে আনা এবং ২০১৮ সালের মধ্যভাগ থেকে সম্পূর্ণ সেশনজটমুক্ত হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সেশনজট নিরসনে গৃহীত পদক্ষেপের পর এখন আমাদের মূল লক্ষ্য হবে দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ অর্থাৎ শিক্ষার মানোন্নয়নে কর্মপ্রচেষ্টা নিয়োজিত করা।
সিনেট অধিবেশনে মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী তথা পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর দোসর ড. এম. এ বারীর নামে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ভবন রয়েছে, ওই নাম অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করে তার পরিবর্তে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনো বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বা বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধার নামে নামকরণ করার প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
অধিবেশনে বার্ষিক রিপোর্ট এবং উন্নয়ন বাজেট পাস করার পর ভাইস-চ্যান্সেলরের অভিভাষণের ওপর দীর্ঘ আলোচনা হয়। আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে কুমিল্লা-৫ এর সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোঃ আলী আশরাফ, নাটোর-৪ এর সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুল কুদ্দুস, প্রফেসর ড. শরীফ এনামুল কবির, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, অধ্যাপক ড. আল মাসুদ হাসানউজ্জামান, অধ্যাপক ড. মুনতাসীর উদ্দিন খান মামুন, অধ্যাপক ড. এম অহিদুজ্জামান, উপাচার্য সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, ড. মোঃ আবুল ফতেহ, রেজাউল কবির, প্রফেসর বিজিত কুমার ভট্টাচার্য, প্রফেসর ফজলুল হক, অধ্যাপক শাহ সাজেদা, প্রফেসর বাঞ্ছিতা চাকমা, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার, বরিশাল, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান রামেন্দু মজুমদার, অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস)’র সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ আসলাম ভূঁইয়া, প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর, প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক মোঃ নোমান উর রশীদ এবং ট্রেজারার অংশগ্রহণ করেন।
বক্তাগণ বর্তমান প্রশাসনের সময়ে আঞ্চলিক কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ, বিভিন্ন সফটওয়্যার তৈরি তথা তথ্য-প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনে গতি সঞ্চার, সেশনজট নিরসনে উল্লেখযোগ্য সাফল্যসহ সর্বক্ষেত্রে লক্ষনীয় অগ্রগতি অর্জিত হওয়ায় এসবের প্রশংসা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গৃহীত পদক্ষেপের প্রতি তাদের সর্বাত্মক সমর্থন ঘোষণা করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও পরামর্শ দফতরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ ফয়জুল করিম সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।