দৈনিকবার্তা-ঘাটাইল (টাঙ্গাইল), ১০ জুন: শান্তির দাবী নিয়ে টানা ১৫৩ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বুধবার কর্মসূচীর ১৫৪ তম দিনে ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থান করছেন। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলা থেকে তিনি ঘাটাইলের সাগরদীঘিতে আসেন।
প্রধানমন্ত্রীকে সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণ এবং বিএনপির নেত্রীকে অবরোধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম ২৮ জানুয়ারি থেকে মতিঝিলের ফুটপাতে অবস্থান কর্মসূচী শুরু করেন। পুলিশি হয়রানি, নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার, শীতের প্রকোপ, ঝড়-বৃষ্টিতেও ফুটপাত থেকে সরেননি তিনি। টানা ৬৪ দিন মতিঝিলে অবস্থানের পর দেশের প্রবীণ নাগরিক, বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের অনুরোধে সাড়া দিয়ে ২ এপ্রিল থেকে শান্তির দাবী নিয়ে সারাদেশে সফর শুরু করেছেন। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, জিয়াউর রহমান বীর উত্তম, বঙ্গতাজ তাজ উদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম মনসুর আলী ও পচাত্তরের ১৫ আগস্ট নিহতদের কবর জিয়ারত করে তিনি গাজীপুর সদর, শ্রীপুর, সখিপুর, ফুলবাড়ীয়া, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ সদর, ফুলপুর, হালুয়াঘাট, নালিতাবাড়ী, শেরপুর সদর, জামালপুর সদর, মধুপুর, ঘাটাইল, নাগরপুর, সখিপুর, টঙ্গী, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ সদর, ফতুল্লা, মুন্সীগঞ্জ সদর, লৌহজং, ভৈরব, বাজিতপুর, কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ সদর, করিমগঞ্জ, ইটনা, অষ্টগ্রাম, পাকুন্দিয়া, হোসেনপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করেন। এই কর্মসূচীর সাথে সংহতি প্রকাশ করতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষেরা প্রতিদিনই তার সাথে সাক্ষাত করছেন। বাড়ী বাড়ী থেকে রান্না করা খাবার দিচ্ছেন তারা, পরম মমতায় তুলে দিচ্ছেন গাছের ফল-ফলাদী।
নিজের ঘর-বাড়ী, পরিবার-পরিজন ছেড়ে মাঠে-ঘাটে, পথে-প্রান্তরে অবস্থান সম্পর্কে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেন, ‘মানুষের অধিকার আদায়ের জন্যে একাত্তরে অস্ত্র হাতে ৯ মাস ঘরের বাইরে ছিলাম। আমি ঘরের বাইরে থাকলে যদি শিশুরা নিরাপদ থাকে, নারীর সম্ভ্রম রক্ষিত হয়, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা থাকে, দেশে যদি শান্তি আসে তবে আমি সারা জীবন ঘরের বাইরে থাকতে আমার কোন আপত্তি নেই।’ তিনি বলেন, ‘দালান বানানোর পর যেমন শ্রমিকের সেই দালানে প্রবেশাধিকার থাকে না, তেমনি মুক্তিযোদ্ধারা দেশ বানানোর পর দেশ পরিচালনায় তাদের কোন অধিকার দেয়া হয়নি। পাকিস্তানীরা বাঙালীর ভোটের অধিকার মেনে নেয়নি বলেই একাত্তরে যুদ্ধ করে আমরা বাংলাদেশ বানিয়েছিলাম। আজকেও বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার নাই, তাদের জান-মালের কোন নিরাপত্তা নাই। এ পরিস্থিতির জন্য ঘরে বসে বসে আফসোস করার চাইতে মানুষকে জাগ্রত করতে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছি।বৃহস্পতিবার তিনি সখিপুরের বড়চওনাতে অবস্থান করবেন।