দৈনিকবার্তা- নারায়ণগঞ্জ, ১০ জুন: নারায়ণগঞ্জ শহরের ভূঁইয়ারবাগ এলাকায় পারিবারিক কলহের জের ধরে অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহবধূ আঁখি বেগম(৩৫) এর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, তার মেয়েকে নির্যাতনের পর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন। এই ঘটনায় পুলিশ নিহতের শাশুড়িসহ ৪ জনকে আটক করেছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী মোহাম্মদ কাইয়ুম পলাতক রয়েছে। নিহত গৃহবধূ আখিঁ আক্তারের বাবা আসলাম মিয়া জানান, ২০০২ সালে শহরের ভূঁইয়ারবাগ এলাকার মৃত করিম বেপারীর ছেলে কাপড়ের ব্যবসায়ী কাইয়ুমের সঙ্গে শহরের গলাচিপা এলাকার আসলাম মিয়ার মেয়ে আঁখি আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১৩ বছর বয়সী শান্ত, ৯ বছর বয়সী শিমুল ও দেড় বছর বয়সী স¤্রাট নামের তিন ছেলে রয়েছে। বিয়ের আগে থেকেই জামাতা কাইয়ুমের বড় ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে তার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পর থেকে কাইয়ুম আঁখিকে নানাভাবে শারিরীক নির্যাতন করতো। এর আগে দুইবার কাইয়ুম স্ত্রী আঁখিকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। তার বিরুদ্ধে মাদক সেবনেরও অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার রাত একটার দিকে কাইয়ুম ও তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী মিলে আঁখিকে মারধর করে। এক পর্যায়ে তারা আঁখির গায়ে কোরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। অগ্নিদগ্ধ আঁখির চিৎকারে প্রতিবেশীরে এসে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠায়। ভোরে হাসপাতালে আঁখির মৃত্যু হয়। ঘটনার পর আঁখির স¦ামী কাইয়ুম পালিয়ে যায়।
তবে অভিযুক্ত স্বামী মোহাম্মদ কাইয়ুম মুঠোফোনে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এলাকার মাদকাসক্ত ছেলের সঙ্গে তার ওঠাবসা না করা নিয়ে রাতে স্ত্রী আঁিখর সঙ্গে ঝগড়া হয়। এই নিয়ে বাগবিতন্ডার এক পর্যায়ে তার স্ত্রী আঁিখ নিজের ও তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়ারা দরজা ভেঙ্গে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাদের দু’জনকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। স্ত্রী আখির শরীরের বেশি অংশ পুড়ে যাওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। আগুনে তার হাত ও পেট পুড়ে গেছে। তবে আপনি কোথায় চিকিৎসা নিয়েছেন জানতে চাইলে, তিনি বলেন ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন। আগুনে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: আসাদুজ্জামান জানান, গৃহবধূর লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে রয়েছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের শাশুড়িসহ ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। কী কারণে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।