Arrest1433831840

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৯ জুন: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানেও থামছে না জাল নোট তৈরি। সোমবার রাতে এই চক্রের সন্দেহভাজন ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে ওঠা চক্রটি চার-পাঁচ কোটি জাল টাকা বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনায় ছিল বলে দাবি পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি)। রাজধানীর মিরপুর থেকে জাল নোট চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা ঈদ সামনে রেখে ৫০ লাখ টাকার নোট বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন- শফিকুল ইসলাম ওরফে শামিম, সোহাগ অধিকারী, সুমন আহমেদ, বায়েজীদ উদ্দিন, সিদ্দিকুর রহমান ও মোছাম্মত জেসমিন আক্তার।ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিবি গত এক বছরে প্রায় ৫০ জনকে জাল টাকা তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। এর পরও এই চক্রটি সক্রিয়।

সোমবার রাতে রাজধানীর মিরপুরের একটি বাসা থেকে এই চক্রের সন্দেহভাজন ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি।ডিবির ভাষ্যমতে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন শফিকুল ইসলাম, সোহাগ অধিকারী, সুমন আহমেদ, বায়েজিদ উদ্দিন, সিদ্দিকুর রহমান ও জেসমিন আক্তার।এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে ডিবি। সেখানে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) শেখ নাজমুল আলম দাবি করেন, চক্রটির প্রধান শফিকুল। তিনি ও তাঁর সহযোগীরা ছয়-সাত বছর ধরে এই কাজে জড়িত। এর আগে শফিকুল দুবার পুলিশের কাছে ধরা পড়েছিলেন। অল্পসময়ের মধ্যে জামিনে বেরিয়ে আবার পুরোনো পেশায় ফেরেন তিনি।

ডিবির দাবি, ঈদকে সামনে রেখে চক্রটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারা প্রায় চার-পাঁচ কোটি জাল টাকা বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। তবে তাঁদের কাছ থেকে ছাপা-অর্ধ ছাপা মিলিয়ে ৫০ লাখ জাল টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে জাল টাকা তৈরির সরঞ্জাম।মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) শেখ নাজমুল আলমের ভাষ্য, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা জাল টাকা তৈরি করে আরেকটি চক্রকে দেয়। দ্বিতীয় চক্রটি আরেকটি চক্রকে জাল টাকা সরবরাহ করে। তৃতীয় চক্রটি জাল টাকা বাজারে ছাড়ে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা কার্যাদেশ সাপেক্ষে ভারতীয় রুপি, মার্কিন ডলার ও ইউরোর জাল নোট তৈরি করে দেয়ও বলেও দাবি করে ডিবি। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় মামলা হয়েছে বলে জানায় ডিবি। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মুনতাসিরুল ইসলাম জানান, সোমবার রাতে মিরপুর মডেল থানা এলাকার মধ্য মনিপুর আদর্শ রোডের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে পুলিশের গণমাধ্যম কর্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম বলেন, ঈদ সামনে রেখে এ চক্রটি জাল টাকা তৈরি করছিল। গোয়েন্দা পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, এ চক্রের সদস্যরা মূলত তিন ভাগে কাজ করে। এক দল জাল টাকার নিরাপত্তা সুতা ও টাকা তৈরি করে, আরেক দল জাল টাকা সংগ্রহ করে এবং তৃতীয় দলটি সারাদেশে জাল টাকা ছড়িয়ে দেয়।

প্রথমপক্ষ প্রতি লাখ টাকা ১০-১২ হাজার টাকায় বিক্রি করে দ্বিতীয় পক্ষের কাছে। এই পক্ষটি ২০-২৫ টাকায় তৃতীয় পক্ষের কাছে জালনোট বিক্রি করে, যারা নোটগুলো সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়। তবে এ বছর চক্রটি এখনো বাজারে জাল টাকা ছাড়তে পারেনি বলে দাবি করেন শেখ নাজমুল আলম।

অভিযানে অংশ নেওয়া গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মাহমুদ নাসের জনি বলেন, এই চক্রটি ৬-৭ বছর ধরে জাল টাকা তৈরি করছে। আগেও এদের কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছিল রোজা সামনে রেখে তারা ৫০ লাখ জাল টাকা বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিল বলে জানান জনি।অন্যদের মধ্যে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মাশরুকুর রহমান খালেদ, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) এসএম জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।