দৈনিকবার্তা-গোপালগঞ্জ, ৯ জুন: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল খনন করা নিয়ে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়ম অনুযায়ী খাল খনন না হওয়ায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করেও কোন ফল হয়নি। উল্টো ঠিকাদারের লোকজন এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি দেখিয়েছে। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করেছে।গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানাগেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় গোপালগঞ্জ জেলার ভরাট হয়ে যাওয়া বিভিন্ন খাল সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সে অনুযায়ী কোটালীাড়া উপজেলার হিরন ইউনিয়নের হিরন স্বনির্ভর খাল থেকে পোলশাইর হয়ে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা দত্ত ডাঙ্গা পর্যন্ত খাল খননে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ ৫২ হাজার ৬ শত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।এ খাল খননে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স কামরুল এন্টারপ্রাইজ কাজ পেলেও তিনি কাজ না করে উপজেলার পিঞ্জুরী ইউপি চেয়ার্যান মোঃ আবু সাঈদ শিকদার ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হয়ে খাল খননের কাজ শুরু করেছেন।নিয়ম অনুযায়ী খালের গভীরতা ৫ ফুট এবং চওড়া ১৫ ফুট হওয়ার কথা থাকলেও তিনি তা না করে ২ টি স্কেভেটর মেশিন দিয়ে খালের ভিতরের কিছু মাটি কেটে খালের পাড়ে ও খালের ভিতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখে দিচ্ছে। যার ফলে আগামী বর্ষা মৌষুম এলেই বৃষ্টির পানিতে এসব মাটি আবার খালের মধ্যে গিয়ে পড়ে ভরাট হয়ে যাবে।
গত রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স কামরুল এন্টারপ্রাইজ এর প্রতিনিধি পিঞ্জুরী ইউপি চেয়ারম্যান ২ টি স্কেভেটর মেশিন দিয়ে খালের মাটি কাটাচ্ছেন। কোথাও কোথাও খালের মাটি খালের মধ্যেই রাখা হয়েছে আবার কোথাও খালের পাড়ে রাস্তায় রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের বেধে দেওয়া নিয়ম না মেনে নিজের ইচ্ছায় পাউবির এ খাল খননের কাজ করছেন তিনি। এ নিয়ে হিরন ইউপি চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করলেও কোন ফল হয়নি। উল্টো ঠিকাদারের ভয়ভীতিতে ফিরে আসে তারা।
এ ব্যাপারে পোলশাইর গ্রামের সঞ্জিত বালা, হিরন গ্রামের আলী উজ্জামান খাঁ, এনামূল মুন্সী, আব্বাস খান জানান, ঠিকাদার তার ইচ্ছা মত খালের তলা থেকে কিছু মাটি কেটে খালের ভিতরে ও খালের পাড়ে রাখছে। যে কারণে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে ধুইয়ে খালের ভিতরে গিয়ে ভরাট হয়ে যাবে।হিরন ইউপি চেয়ারম্যান মুন্সী এবাদুল ইসলম বলেন, হিরন, আশুতিয়া, পোলশাইর, বর্ষাপাড়া, মাঝবাড়ী, বংকুরা ও টুপুরিয়া গ্রামের মানুষের এই খালটি খননের জন্য দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা ছিল। এ খালটি ভরাট হওয়ায় কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতার কারনে এসব গ্রামের কৃষকদের শতশত হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে। আবার খড়া মৌষুমে খালের পানি শুকিয়ে গেলে সেচ ব্যবস্থার অভাবে বোর ফসলের জমি অনাবাদি থেকে যায়। খালটি খননের কথা জেনে আমি খুশি হয়েছিলাম। বর্তমানে দেখছি ঠিকাদার যে ভাবে নিয়ম ছাড়া খাল খনন করছে তাতে এ বছর বর্ষা মৌষুমে খালটি আবার ভরাট হয়ে যাবে।
এব্যাপারে মেসার্স কামরুল এন্টারপ্রাইজ এর প্রতিনিধি পিঞ্জুরী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবু সাঈদ শিকদারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সবেমাত্র কাজ শুরু করেছি নিয়ম অনুযায়ী কাজ শেষ করবো।গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, কেবলমাত্র খাল খননের কাজ শুরু হয়েছে। আমি ওখানে গিয়ে ডিজাইন অনুযায়ী খাল খননের জন্য উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ও ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি। ঠিকাদারের কাছ থেকে শত ভাগ কাজ বুঝে নেওয়া হবে।