দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ৮ জুন: আইএপিপি (ইন্টিগ্রেটেড এগ্রিকালচারাল প্রোডাকটিভিটি প্রোজেক্ট-ব্রি কম্পোনেন্ট) ব্রি-অঙ্গ প্রকল্প থেকে এ পর্যন্ত প্রকল্পের সহযোগিতায় পাঁচটি ধানের জাত ও আটটি ফসল ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এ ছাড়া ২১ টন ব্রিডার বীজ, ৩২৬টি প্রযুক্তি প্রদর্শনী এবং ১২৬২টি পিভিএস, ভ্যালিডেশন, এ্যাডাপটিভ ট্রায়াল কৃষকের মাঠে স্থাপন করা হয়েছে। এ প্রকল্প থেকে খরা, বন্যা ও ঠা-া সহনশীল আরও উন্নত ধানের জাত উদ্ভাবন করা হবে, যেগুলোর অগ্রগামী কৌলিক সারিসমূহ ইতোমধ্যেই উদ্ভাবন করা হয়েছে।
এ ছাড়াও এ প্রকল্প থেকে এ পর্যন্ত তিন হাজার কৃষক, ৯’শ জন বৈজ্ঞানিক সহকারি ও বিজ্ঞানীদের আধুনিক ধান উৎপাদন ব্যবস্থাপনার ওপরে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়াও ব্রি’র গবেষণা দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ৯১টি ল্যাব ইকুয়েপমেন্ট, বিভিন্ন কেমিক্যালস ও ল্যাব এক্সেসরিজ ক্রয় করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয় রংপুর ও বরিশালের ব্রিডার বীজ উৎপাদনের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সোমবার সকালে সমন্বিত কৃষিবিষয়ক উৎপাদনশীলতা (ইন্টিগ্রেটেড এগ্রিকালচারাল প্রোডাকটিভিটি প্রোজেক্ট-ব্রি কম্পোনেন্ট) -ব্রি অঙ্গ প্রকল্পের অগ্রগতি শীর্ষক অনুষ্ঠিত কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। গাজীপুরস্থিত বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) মিলনায়তনে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রি’র মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: নাসিরুজ্জামান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্রির পরিচালক (গবেষণা) ড. আনছার আলী। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইএপিপি প্রকল্প ব্যবস্থাপক ড. কে এম ইফতেখারুদ্দৌলা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইএপিপি এর কোর বিজ্ঞানী এবং ব্রির উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের ঊর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো: আবদুল কাদের।
দি গ্লোবাল এগ্রিকালচার এ্যা- ফুড প্রোগ্রাম (জিএএফএসপি) এবং বাংলাদেশ সরকারের (জিওবি) যৌথ অর্থায়নে বিশ্বব্যাংকের তত্ত্বাবধানে কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে শুরু হয়ে প্রকল্পটি বর্তমানে চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করেছে। আকস্মিক বন্যা, খরা ও ঠা-া পীড়িত বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের চারটি জেলা (রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারি) এবং জোয়ার-ভাটা ও লবণাক্ততা কবলিত বরিশাল অঞ্চলের চারটি জেলার (ঝালকাঠি, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালি) ধান উৎপাদন বৃদ্ধি করা এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
কর্মশালায় আরও জানানো হয়, লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্রি উদ্ভাবিত ধানের উন্নত জাত ও উৎপাদন ব্যবস্থাপনাসমূহ কৃষকের মাঠে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আইএপিপি-ব্রি অঙ্গ, আইএপিপি বিএডিসি, আইএপিপি-ডিএই, আইএপিপি-এসসিএ অঙ্গের সাথে কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে কাজ করছে। প্রকল্প শুরুর সময়কালের সাথে তুলনা করলে এখন পর্যন্ত প্রকল্প এলাকার ধানের উৎপাদন শতকরা ১৫ ভাগ বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রি’র গবেষণা দক্ষতাসহ প্রকল্প এলাকার ধানের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।