DoinikBarta_দৈনিকবার্তা_07-06-15-Narendra Modi Received The Award Of Liberation War Honour At Bangabhaban-8

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৭ জুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর ভূমিকা স্মরণ করে বলেছেন,ভারতের রাজনৈতিক মহলকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে আনতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।প্রধানমন্ত্রী রোবাবর বঙ্গভবনে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে মুক্তিযুদ্ধের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে ভাষণকালে একথা বলেন।বাজপেয়ীর পক্ষে এই সম্মাননা গ্রহণ করেন বাংলাদেশ সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীকে ‘মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ দিয়ে বাংলাদেশই সম্মানিত হয়েছে।রোববার বাজপেয়ীর উত্তরসূরি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে এ সম্মাননা তুলে দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

বঙ্গভবনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে ভারতবাসীর অবদান ও বাজপেয়ীর সমর্থনের কথা তুলে ধরে বলেন, এ ধরনের একজন মহৎ ব্যক্তি এবং বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধুকে সম্মানিত করার মাধ্যমে আমরা নিজেদের সম্মানিত করছি।১৯৭১ সালে বাঙালি জাতি যখন পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, সে সময় অটল বিহারী বাজপেয়ী লোকসভার সদস্য হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন। অরগানাইজার পত্রিকার সম্পাদকীয় নিবন্ধে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাকে স্বাগত জানান এবং বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দিতে ও মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহবান জানান।তার সেই সমর্থন ভারতীয় রাজনৈতিক মহলকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। সে সময় তিনি যেসব কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন সেগুলো আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে বিশেষ অবদান রেখেছিল।

বাংলাদেশের প্রতি তার সহমর্মিতা ও সহযোগিতা আমরা সবসময়ই পেয়েছি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তার প্রমাণ মিলেছে।বাজপেয়ীর একটি উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন সুকবি হিসেবে বাজপেয়ী একবার বলেছিলেন, আমি জয়-পরাজয়ে ভীত নই, আমার কর্তব্য পালনের পথে যাই আসুক না কেন, আমি তা গ্রহণ করব। কারণ এটা যেমন সত্য, ওটাও তেমনি সত্য।

৯১ বছর বয়সী অটল বিহারী বাজপেয়ী ভারতের সংসদ সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তার জীবনের অর্ধেকের বেশি সময়। ভারত সরকার ১৯৯২ সালে তাকে ‘পদ্মবিভূষণ’ এবং ২০১৪ সালে ‘ভারতরতœ’ পদকে ভূষিত করে।তাকে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু অভিহিত করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা খুবই খুশি হতাম যদি শ্রী বাজপেয়ী আমাদের মাঝে উপস্থিত থেকে পুরস্কারটি গ্রহণ করতে পারতেন।শারীরিক অবস্থা ভালো থাকলে বাজপেয়ী নিজেই এ সম্মাননা গ্রহন করতেন এবং তাতে এ আয়োজন আরও পূর্ণতা পেত বলে মন্তব্য করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী।

অটরবিহারী বাজপেয়ী বাংলাদেশের একজন প্রকৃত বন্ধু একথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁকে মুক্তিযুদ্ধের সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে আমি সম্মানিত বোধ করছি।বাজপেয়ীর উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে এ সম্মাননা হস্তান্তরে শেখ হাসিনা তাঁর আনন্দ ও সন্তোষের কথা প্রকাশ করে বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দখলদার পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ ভারতকে পাশে পেয়েছিল। ওই সময় ভারত বাংলাদেশী শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিল।প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনীতিবিদ হিসেবে শ্রী বাজপেয়ীর অকুণ্ঠ সমর্থন ভারতীয় রাজনীতিকদের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় অটরবিহারী বাজপেয়ীর ভূমিকার উল্লেখ করে সম্মাননা পাঠ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম মোশাররাফ হোসেইন ভূইঞা।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শ্রী বাজপেয়ীর কাছ থেকে সব সময় সহমর্মিতা ও সহযোগিতা পেয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে তিনি এ স্বাক্ষর রেখেছেন।তিনি বলেন, শ্রী বাজপেয়ী আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়ে এই সম্মাননা গ্রহণ করতে পারলে আমরা আরো খুশি হতাম। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি আসতে পারেননি।

আমি কখনো সাফল্য বা ব্যর্থতায় উদ্বিগ্ন নই। দায়িত্ব পালনের পথে সাফল্য ও ব্যর্থতা উভয়কে গ্রহণ করতে প্রস্থত আমি।কেননা দু’টিই সত্য- বিশিষ্ট কবি অটলবিহারী বাজপেয়ীর এই বক্তব্যের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি বাজপেয়ীর দীর্ঘ জীবন ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেন।