দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৭ জুন: যাবতীয় সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন স্বঘোষিত ধনকুবের প্রিন্স মুসা খ্যাত মুসা বিন শমসের। প্রথম দফায় সময় বাড়ানোর পর দ্বিতীয় দফার শেষ দিন রোববার দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সম্পদ বিবরণী জমা দেন তিনি।রোববার দুপুরে মুসা বিন শমসের তার আইনজীবীর মাধ্যমে দুদক সচিব বরাবর এ সম্পদের হিসাব জামা দেন। দুদকে জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দুদক সূত্র জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে গাজীপুরের কয়েকটি মৌজায় এবং সাভারে মুসা বিন শমসেরের নামে এক হাজার ২’শ বিঘার জমির সন্ধান পাওয়া গেছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য আনুমানিক তিন হাজার কোটি টাকা। মুসা বিন শমসের এসব জমি ১৯৭৩ সালে কিনেছেন। যার অধিকাংশ এখন বে-দখল। কিন্তু এসব জমির দলিলপত্র তার হাতেই রয়েছে। এসব জমির অধিকাংশ জমি বর্তমানে গাজীপুর জেলার বিভিন্ন মৌজায় তফসিলভুক্ত।অধিকাংশ সময় দেশে না থাকায় এসব জমির খাজনা পরিশোধ করে নামজারি করা সম্ভব হয়নি মুসার। তবে গত কয়েক বছরে দেশে অবস্থানের কারণে জমিগুলো পুনরুদ্ধারে নামজারি করে নিজের আয়ত্তে নেয়ার চেষ্টা করছেন। এছাড়া সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত সুইস ব্যাংকে মুসা বিন শমসেরের প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার টাকা জব্দ (ফ্রিজ) রয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। যার মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৭৮ টাকা হিসাবে)।
দুদক সূত্র আরো জানায়, এসব ব্যাপারে পুরিপূর্ণভাবে জানতে ও বৃহত্তর অনুসন্ধানের স্বার্থে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মুসা বিন শমসেরের সম্পদ বিবরণী চেয়ে গত ১৯ মে নোটিশ পাঠিয়েছিল দুদক। নোটিশে তার ও তার ওপর নির্ভরশীলদের স্থাবর-অস্থাবরসহ যাবতীয় সম্পদের হিসাব চাওয়া হয়েছিল। সেইসঙ্গে সম্পদ বিবরণী আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে দুদক সচিব বরাবর পাঠাতে বলা হয়। কিন্তু তিনি সম্পদরে হিসাব সাত কার্যদিবসের মধ্যে পাঠাতে পারবেন না বলে দুদকের কাছে দ্বিতীয় দফায় আরও সাত কার্যদিবস সময়ের আবেদন করেন। যার শেষ দিন ছিল আজ রোববার (৭জুন)।আজ যদি তিনি কোনো কারণ ছাড়াই সম্পদ বিবরণী পাঠাতে না পারতেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করার অভিযোগে ‘নন সাবমিশন’ মামলা দায়ের করা হতো বলে মাসিক সংবাদ সম্মেলনে ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন দুদকের এক মহাপরিচালক।আজকে জমাকৃত তার সম্পদ বিবরণীতে তার স্থাবর-অস্থাবর ও তার ওপর নির্ভরশীলদের যাবতীয় সম্পদের হিসাব দিয়েছেন মুসা বিন শমসের।
দুদক সূত্র জানিয়েছে সে বিবরণী এখন বৃহত্তর অনুসন্ধানের জন্য যাচাই-বাছাই করা হবে। অনুসন্ধানে এই সম্পদ বিবরণীতে দাখিলকৃত কোনো অংশ বা পরিমাণ অবৈধ বলে প্রমানিত হলে অথবা কোনো তথ্য গোপন করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। আর এই সম্পদ বিবরণী যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে বুঝা যাবে আসলে তিনি কতগুলো বৈধ বা অবৈধ সম্পদের মালিক। সেই সঙ্গে মানুষের মনে তাকে (মুসাকে) নিয়ে জন্ম নেয়া বিভিন্ন রহস্যেরও অবসান ঘটবে বলে মনে কর দুদক।তবে এই মুহুর্তে অনুসন্ধানের স্বার্থে মুসা কি পরিমাণ সম্পদের হিসাব দাখিল করেছেন তা বলা যাচ্ছে না বলে জানান করেন সূত্রটি।উল্লেখ্য, মুসা বিন শসমেরের সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান করছেন দুদকের উপ-পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদিন শিবলী।অনুসন্ধান পক্রিয়ায় তাকে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।