DoinikBarta_দৈনিকবার্তা_gawhar_30813

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৫ জুনঃ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের নিহত সেনাদের তালিকা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। তিনি বলেন, স্বাধীনতার সময়ে ভারতের সেনাবাহিনীর প্রায় ১৫ থেকে ১৮শ’ সদস্য নিহত হয়েছেন। তাদের তালিকা করা হচ্ছে। উনাদের সবাইকে আমরা সম্মান জানাব। পাশাপাশি ওই সময়ে বাংলাদেশের যে সব মুক্তিযোদ্ধা ভারতে মারা গেছেন, তাদের দেহাবশেষ বাংলাদেশে নিয়ে এসে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেয়া হবে।জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স রুমে শুক্রবার সকালে ‘ঐতিহাসিক স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদন বাংলাদেশ ভারত বন্ধুত্বের যুগান্তকারী সাফল্য’ শিরোনামে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।গওহর রিজভী বলেন,নিহত ওই সব মুক্তিযোদ্ধার একটি তালিকা তৈরিতে গত কয়েক বছর ধরে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। এ বিষয়ে একটি চুক্তিও সম্পাদন হবে মোদির সফরে।প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরে তিনটি পাওয়ার প্ল্যান্ট চুক্তি সম্পাদিত হবে, যেখানে প্রায় ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।তিনি বলেন আমাদের বিদ্যুতের যে সমস্যা আছে তা অনেকাংশই সমাধান হবে ওই চুক্তির মাধ্যমে। আগামীকাল (শনিবার) ওই চুক্তি সম্পাদন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

গওহর রিজভী বলেন, রফতানি করতে অনেক সময়ে আমাদের পুরনো পদ্ধতিগুলো বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে এ বিষয়ে সংস্কারকাজ চলছে। আমরা ইন্টিগ্রেটেড বর্ডার কোস্ট করার জন্য চুক্তি করতে যাচ্ছি। ফলে আমাদের লোকগুলো আটক হবে না।এদিকে শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক: আঞ্চলিক উন্নতি ও সৌহার্দ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গওহর রিজভী বলেন, তিস্তা চুক্তি একদিন না একদিন হবেই। আমরা গত কয়েকবছর ধরে ভারতকে চাপ দিয়ে যাচ্ছি, আগামী দুই দিনে আরো চাপ দিব। এ সফরে হয়তো চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে না, তবে এবার একটি ভালো সম্ভাবনা তৈরি হবে।রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতি কর্তৃক আয়োজিত এই সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ও সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সেমিনারের মূল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।ভারতে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেল সম্প্রচার বিষয়ক প্রশ্নের জবাবে গওহর রিজভী বলেন, এই সমস্যাটি আসলে দুই দেশের সরকারের মধ্যকার সমস্যা নয়। এটি ব্যবসায়ীক সমস্যার কারণে সমাধান করা যাচ্ছে না। তারপরও আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি যেন ওদের দেশে আমাদের চ্যানেল সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বলেছেন, তিস্তা চুক্তিতে বাংলাদেশ-ভারতের কোনো সমস্যা নেই। দিল্লি-কলকাতার সম্মতি না পাওয়ার কারণে আটকে আছে এ চুক্তি।

গওহর রিজভী বলেন, তিস্তা চুক্তি হবেই। আজ হোক কাল হোক এটা হতেই হবে। পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার (০৫ জুন) রাতে ঢাকায় আসার পরে তিস্তা চুক্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করা হবে। ২০১১ সালের পরে এ বিষয়ে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি।সীমান্তে হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে গওহর বলেন, সব সময় বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকে না।গরু পাচারকারীদের নিজেদের মধ্যে বিরোধের জের ধরে নিজেরাই একে অন্যকে হত্যা করে থাকে।বাংলাদেশ-ভারত সর্ম্পকের দৃঢ়তা তুলে ধরে সভাপতির বক্তব্য রাখেন- রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. গিয়াস উদ্দিন মোল্লা।মূল আলোচকের বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. আতিউর রহমান বলেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার যে দুয়ার খুলছে তাতে ভারতের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহবান জানাচ্ছি। কয়েকটি ঐতিহাসিক চুক্তি দু’দেশের সর্ম্পকে যুগযুগ ধরে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এসব চুক্তির ফলে বাংলাদেশের মালবাহী ট্রাকগুলো ভারত হয়ে সার্কভূক্ত দেশগুলোতে সরাসরি যেতে পারে। সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, সাবেক কূটনীতিক হারুন উর রশিদ। এছাড়াও সেমিনারে বক্তব্য রাখেন- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ, মুন্সী ফয়জুল হক, ঢাবি শিক্ষার্থী শহীদুল আলম প্রমুখ।