

বর্তমান সরকারকে দুর্নীতিগ্রস্থ বলে অভিযোগ করে সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী আবদুল মঈন খান বলেন, ‘‘ দুর্নীতিতে আপাদমন্তক এই সরকার ডুবে গেছে। যার প্রতিফল হয়েছে বাজেটে। শুনেছি, পাঁচশ সাতশ কোটি টাকার প্রজেক্ট নিয়ে গেলে নাকি বলা হয় কি প্রজেক্ট এনেছো, দশ হাজার-বিশ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট আনো। অনুমোদন দিয়ে দেব।
উন্নয়ন ও গণতন্ত্র নিয়ে ক্ষমতাসীনদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘ আজকে বলা হচ্ছে, উন্নয়ন বদলে গণতন্ত্রের কোনো প্রয়োজন নেই। এটা হতে পারে না। সুশাসন, মানবাধিকার ও মানুষের কথা বলার অধিকার ব্যতিরেখে কোনো উন্নয়ন টেকসই হতে পারে না। এটাই হচ্ছে পৃথিবীর ‘‘ উ্ন্নয়নের দোহাই দিয়ে গণতন্ত্রকে ভুলন্ঠিত করেছেন, মানবাধিকার ভুলন্ঠিত করেছেন, দুর্নীতিতে জর্জরিত হয়েছেন, তারা হয়ত কিছুদিন কিছু সময়ের জন্য এখানে ভোগভিলাস করে গেছেন, তারা কোনোদিন ইতিহাসে সন্মানের সঙ্গে তাদের নাম রেখে যেতে পারেননি।’’
জিয়াউর রহমানের জীবনের ওপর আলোচনায় তিনি বলেন, বর্তমানে যারা মুক্তিযুদ্ধে স্বপক্ষের শক্তি বলে পরিচয় দেন, তাদের কাউকেই মুক্তিযুদ্ধের সময় পাওয়া যায়নি। তারা বর্ডার পার হয়ে ওপারে চলে গিয়েছিলেন। তারা মুক্তিযুদ্ধ করেনি।তিনি বলেন, ২৬ মার্চ যখন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হয়েছিলো, তখন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের নেতাদের ডাকা হয়েছিলো। তারা জিয়াউর রহমানকে বলেছিলেন, ইউ আর দ্যা মেজর, উই আর মাইনর। তাই ঘোষণা আপনিই দেন। অথচ সামরিক বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় এ ধরণের কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার পরিণতি কি, তা তিনি জানতেন। তারপরও মেজর জিয়া সেদিন স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, সাড়ে তিন বছরের যে রাজনৈতিক জীবন জিয়াউর রহমানের, তা আলোচনা করতে গেলে পাঁচ মিনিট, ১০ মিনিট, ১৫ মিনিট বা ১৫ দিনে হবে না। যে কর্মময় জীবন তিনি রেখে গেছেন তা আলোচনা করেত গেলে ৩৫ বছর সময় লাগবে।তিনি বলেন, জিয়ার আদর্শময় জীবন নিয়ে হয়তো ইতিহাসের বইয়ে কিছু লেখা হচ্ছেনা। কিন্তু নতুন প্রজন্মকে রক্তের অক্ষরে বুকের ভেতর সে ইতিহাস লিখতে হবে। জিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই আনুষ্ঠানিক আলোচনা করে কোনো লাভ হবেনা। তার আদর্শকে লালন করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী তিন সিটি নির্বাচন নিয়ে বলেন, ভোটের আগের দিনই ব্যালট পেপারে সিল মারা হয়েছে। এভাবে কোনো নির্বাচন হতে পারেনা। তাই আজকে দেশ যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শকে লালন করতে হবে। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের দর্শনকে নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতে হবে। শহীদ জিয়ার আর্দশ মেনে চলতে হবে। আমাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশ মানুষ ‘‘ হতাশা হবে যাদের সঙ্গে দেশের মানুষ নেই্। হতাশা আজকে আওয়ামী লীগের, হতাশা শেখ হাসিনার। তাদের আচার-আচরণ ও তাদের বডি ল্যাংগুয়েজ হতাশা প্রকাশ পাচ্ছে।’’
বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের সংগঠনের সভাপতি শামা ওবায়েদ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে যুব দল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎ, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল হোসেন, সাদেক আহমেদ খান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।