DoinikBarta_দৈনিকবার্তা_Khaleda-modi21

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৫ জুনঃ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুব্রানিয়াম জয়শংকর বলেছেন, ঢাকা সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সে দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা ছাড়াও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে বৈঠক করবেন। শুক্রবার দুপুরে নয়া দিল্লীতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ৭ই জুন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে মোদীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।এর আগে শুক্রবার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরের সময় তার সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বৈঠকের কোনো সুযোগ নেই। মোদী-খালেদার বৈঠক বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মনে হয়না সুযোগ আছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাপক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেনপররাষ্ট্র মন্ত্রীর এ বক্তব্যের ঠিক ৪ ঘন্টা পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানালেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাথে মোদীর বৈঠকের কর্মসূচি রয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হলো, মোদী ঢাকা সফরের সময় খালেদার সাথে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করবেন।

উল্লেখ্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের মনে কৌতুহল রয়েছে। যদিও বিএনপি খালেদা জিয়ার সাথে মোদীর বৈঠক নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন বক্তব্য দেয়নি। তবে বিএনপি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি দল মোদির ঢাকা সফরকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃি দিয়েছে।ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও বৈঠক করবেন। আজ শুক্রবার বিকেলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রসচিব সুব্রমানিয়াম জয়শঙ্কর। তবে সকালে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছিলেন, সফরকালে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বৈঠকের কোনো সম্ভাবনা নেই।দিল্লিতে ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, সফরের দ্বিতীয় দিনে শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে যাবেন মোদি। এরপর যাবেন রামকৃষ্ণ মিশনে, এরপর ঢাকায় একটি কমপ্লেক্স পরিদর্শন শেষে দুপুরের খাবার খাবেন তিনি। এরপর বাংলাদেশের মাননীয় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মোদি। তারপর তিনি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এর মধ্যে আছেন বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, বাংলাদেশের শীর্ষ চেম্বারের সভাপতি এবং বাংলাদেশের বামপন্থী দলগুলোর নেতৃবৃন্দ।

জয়শঙ্কর বলেন, সফরের দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন। পরে তিনি ভারতের উদ্দেশে রওনা দেবেন। এস জয়শঙ্কর আরো জানান, শনিবার সকালেই ঢাকা পৌঁছাবেন নরেন্দ্র মোদি। সফরের শুরুতেই তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর তিনি ঢাকার ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবেন।ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, দুপুরের খাবারের পর নরেন্দ্র মোদি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শেখ হাসিনা কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করবেন। এরপর স্থলসীমান্ত চুক্তিবিষয়ক কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন তাঁরা। পরে একান্ত বৈঠকে বসবেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিং করবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। রাতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আয়োজনে নৈশভোজে যোগ দেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।ব্রিফিংয়ের শুরুতে সুব্রমানিয়াম বলেন, এর আগে যারা আমার ব্রিফিং কভার করেছেন, তাঁরা জানেন, আমি বিনা প্রয়োজনে কোনো বিষয়ে বিশেষণ ব্যবহার করতে খুবই সতর্ক থাকি। তবে এ ক্ষেত্রে (মোদির বাংলাদেশ সফর) আমি এটিকে ( মোদির বাংলাদেশ সফর) ঐতিহাসিক বলতে চাই।

এর কারণ এ সফরের মূল উপলক্ষ স্থলসীমান্ত চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।আপনারা জানেন, এটা দীর্ঘতম স্থলসীমান্ত।এই অর্জন সাধারণ নয়। তিনি বলেন, স্থলসীমান্ত চুক্তির নিষ্পত্তি এবং এর আগে সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তির মাধ্যমে আমরা প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশের সঙ্গে সীমানার বিষয়টি নিষ্পত্তি করেছি।এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।ভারতের পররাষ্ট্রসচিব জানান, মোদির সফরে দুটি ধারণার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। এর প্রথমটি নেইবারহুড ফার্স্ট (প্রতিবেশী আগে) নীতি। এটা অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির (পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক) অংশ।এর আগে সকালে ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, আগামীকাল ৬ জুন নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে আসছেন। দুদিনের সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একটি সুধী সমাবেশে বক্তৃতা দেবেন। তাঁর সফরকালে কলকাতা-আগরতলা এবং ঢাকা-গুয়াহাটি বাস সার্ভিস, খুলনা-মংলা ও কুলাউড়া শাহবাজপুর রেল সংযোগ পুনর্বহাল, শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে রবীন্দ্রভবন, বর্ডার হাটসহ বেশ কিছু কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে।