দৈনিকবার্তা-ঢাকা,৪জুন : করদাতার সংখ্যা বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়ানোর যে প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নতুন অর্থবছরের বাজেটে দিয়েছেন তাতে করমুক্ত আয়ের সীমা কমিয়ে বাড়ানো হয়েছে ন্যূনতম কর।ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ৩০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।এই প্রস্তাব পাস হলে যারা বছরে আড়াই লাখ টাকার কম আয় করবেন, তারা আয়করের আওতায় আসবেন না।আর ন্যূনতম কর বাড়িয়ে চার হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। অর্থাৎ, যারা কর সনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন), তারা কোনো বছর করযোগ্য না হলেও অন্তত চার হাজার টাকা তাদের দিতেই হবে।বর্তমানে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। আর ন্যূনতম কর ঠিক করা ছিল কয়েকটি স্তরে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদ্যমান আইনে সিটি করপোরেশন, জেলা সদরের পৌরসভা এবং অন্যান্য এলাকার কোম্পানি ব্যতিত অন্য করদাতাদের যথাক্রমে ৩ হাজার, ২ হাজার এবং ১ হাজার টাকা ন্যূনতম কর পরিশোধ করতে হয়।আয়কর একটি সার্বজনীন কর, যা বাংলাদেশে অঞ্চল নির্বিশেষে সমহারে গ্রহণযোগ্য। ফলে বিদ্যমান অঞ্চলভিত্তিক ন্যূনতম কর হার প্রয়োগের পরিবর্তে এ সকল করদাতাদের অঞ্চলভিত্তিক অবস্থান নির্বিশেষে ন্যূনতম করের হার ৪ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি।করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর দাবি গতবছরই উঠেছিল, কিন্তু অর্থমন্ত্রী মুহিত তা আগের মতোই ২ লাখ ২০ হাজার টাকা রেখেছিলেন।
এবার ওই সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব করে তিনি বলেন, বিরাজমান মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, প্রান্তিক করদাতাদের করহার বিবেচনায় ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি।সেইসঙ্গে নারী ও বয়স্ক করদাতাদের এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতাদের আয়করমুক্ত সীমাও বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।বর্তমানে নারী ও ৬৫ বছর ঊর্ধ্ব করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা রয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। নতুন বাজেটে তা বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।একইসঙ্গে প্রতিবন্ধী করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা বিদ্যমান ৩ লাখ ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের করমুক্ত আয়ের সীমা বিদ্যমান ৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা করার ডস্তাব রাখা হয়েছে বাজেটে।
এদিকে, ছোট ও মাঝারি আকারের ফ্ল্যাটের মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) হার কমলেও বড় আকারের ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে বাড়ছে।অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে এ প্রস্তাব করেন।ফ্ল্যাটের উপর অভিন্ন ৩ শতাংশ ভ্যাট মূসক বিদ্যমান। এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ৬০০ বর্গফুট পর্যন্ত এই হার কমানোর এবং এর চেয়ে বড় আয়তনের ক্ষেত্রে বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।অর্থমন্ত্রী বলেন, ভবন নির্মাণ খাতের বিদ্যমান ৩ শতাংশ মূসকের হার পরিবর্তনপূর্বক এক হাজার ১০০ বর্গফুট পর্যন্ত এই হার এক দশমিক ৫ শতাংশ, এক হাজার ১০১ বর্গফুট থেকে এক হাজার ৬০০ বর্গফুট পর্যন্ত দুই দশমিক ৫ শতাংশ এবং এক হাজার ৬০০ বর্গফুটের বেশি আয়তনের ক্ষেত্রে চার দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।