দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ৪ জুন: গাজীপুরে স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে স্বামীসহ দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেছেন গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত। এছাড়াও আদালত ওই দু’জনকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাস সাজা প্রদান করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই আদালতের বিচারক সৈয়দ জাহেদ মনসুর এ রায় প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার চেংনা এলাকার আব্দুস সাত্তারের মেয়ে হামিদা আক্তারকে তার চাচাত ভগ্নিপতি নজরুল ইসলাম পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন। ২০০০ সালের ২০ আগস্ট হামিদাকে নিয়ে কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের ডাওরা হাদিকুলের বাড়িতে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগী শহীদুল্লাহ ওরফে শহীদওই দিন সন্ধ্যায় নজরুলের স্ত্রী হামিদাকে বাড়ির পাশে আখক্ষেতে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে হামিদার মুখ ও হাত বেঁেধ তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেয় নজরুলের সহযোগী শহীদুল্লাহ।
এ সময় স্ত্রী হামিদার শরীরে দিয়াশলাইয়ের কাঠি দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তার স্বামী নজরুল। বিষয়টি টের পেয়ে হাদিকুলের স্ত্রী পারভীন বেগম চিৎকার করতে থাকলে আশপাশের লোকজন এসে হামিদাকে উদ্ধার করে কাপাসিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হামিদা পরদিন হাসপাতালে মারা যায়। নিহত হামিদা ও নজরুলের এটি ছিল দ্বিতীয় বিয়ে।
পর দিন ২২ আগস্ট এ ঘটনায় নিহতের চাচা আব্দুর রহিম বাদি হয়ে ৫ জনকে আসামি করে কাপাসিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) তপন চন্দ্র সাহা ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর ৫জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট প্রদান করেন। মামলায় ১৩ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ গ্রহণ শেষে আদালত বৃহস্পতিবার এমামলার রায়ে নিহতের স্বামীসহ দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাস সাজা প্রদান করেছেন।
আদালত মামলার অপর তিন আসামি কিতাব আলীর ছেলে হাদিকুল, হাদিকুলের স্ত্রী পারভীনা আক্তার ও আছর উদ্দিনের ছেলে রুকন ওরফে লুকুকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছেন। দন্ডপ্রাপ্তরা হলো- নিহতের স্বামী ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার নয়নপুর এলাকার মৃত কিতাব আলীর ছেলে মোঃ নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগী গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার পূর্ব লোহাদী এলাকার মৃত আছর আলীর ছেলে শহীদুল্লাহ ওরফে শহীদ। রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন স্পেশাল পিপি মোঃ ফজলুল কাদের ও মোঃ শাহজাহান। আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট অহিদুজ্জামান।