দৈনিকবার্তা-রাজশাহী, ১ জুন: ভারত ট্রানজিট দিলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর দিয়ে বাংলাদেশ-নেপাল সরাসরি রেল যোগাযোগ চালু হতে পারে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফরে ভারতের এই ট্রানজিট দেয়ার বিষয়টি আরোচনায় আসতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। যদিও বিষয়টি ত্রিদেশীয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৬ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সফরের সময়ও বাংলাদেশ-নেপাল সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা চালুর বিষয়টি গুরুত্ব পায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত সেদিনের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোনামসজিদ স্থল বন্দর পথে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ-মোহদীপুর পথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও মালদাহ্ জেলার সাথে সরাসরি বাস যোগাযোগ ও গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল সরাসরি রেল যোগাযোগ বিষয়ে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য কে স্বাগত জানিয়েছেন জেলার সংসদ সদস্যগন সহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এমনকি সাধারন জনগন। বর্তমানে বাংলাদেশের রহনপুর থেকে ভারতের সিঙ্গাবাদ পথে ভারতের সঙ্গে মালবাহী ট্রেন যোগাযোগ চালু রয়েছে। ভারত যথাযথ ট্রানজিট দিলে নেপাল রেলপথ দিয়ে মালামাল ও যাত্রী পরিবহন করতে আগ্রহী বলে জানা গেছে। ব্রিটিশ আমলের এই রেলপথ দিয়ে বিভিন্ন সময় নেপালে সার সহ কিছু পণ্য রপ্তানীও করা হয়েছে। কিছুদিন আগে ঢাকায় নিযুক্ত নেপালী রাষ্ট্রদূত কুমার শ্রেষ্ঠা গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারী এ রেল বন্দর পরিদর্শন করে গেছেন। তখন তিনি পথটির মাধ্যমে নেপালের সাথে বাংলাদেশের যোগাযোগের সম্ভাব্যতা নিয়েও আশার কথা বলেছেন। বর্তমান সরকারের আগের মেয়াদে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে স্বাক্ষরিত ৫০ দফা প্রটোকলে উভয় দেশই এ রুটকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
এরপর দু’দেশের মধ্যে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার কিছু উন্নয়ন করা হয়। রহনপুর-সিংগাবাদ রেল রুট দিয়ে এখন ভারত থেকে গম,পাথর সহ বিভিন্ন পণ্য আমদানী হচ্ছে। নির্মানাধীন দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প পদ্মা সেতু ও অনান্য বড় প্রকল্পের পাথর আনা হচ্ছে এই পথে। এদিকে, আমদানীকারকরা সহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা এ রেল বন্দরের দ্রুত অধিকতর অবকাঠামোগত উন্নয়ন সহ পূর্ণাঙ্গ রেলবন্দরে পরিণত করার দাবী করছে অনেকদিন যাবৎ। এদিকে জেলাবাসী তথা দেশবাসী মালামাল পরিবহনের পাশাপাশি ভারত ও নেপালের সঙ্গে সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেনও চালু করার দাবী জানাচ্ছে বহুদিন থেকেই। উল্লেখ্য, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের ১ম ছয় মাসে এ রেল বন্দর দিয়ে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করে ৩ কোটি ৫৪ লক্ষ ৫৬ হাজার ৬ শ ৮০ টাকা আয় করেছে সরকার। সবদিক বিবেচনায় এবং সময়ের দাবীতেই গুরুত্বপূর্ন বিষয়টি নিয়ে দ্রুত বাস্তবমূখী আরও কাজ হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। উল্লেখ্য বেনাপোলের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর ও দর্শনার পর রহনপুর রেল বন্দর দেশের বৃহত্তম ভারতের সাথে যোগাযোগ কেন্দ্র।