দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১ জুন: রাজনীতিতে ভুল করে ভুল স্বীকার করলে তাতে কোন লজ্জা নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।সোমবার রাজধানীর ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে সোমবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু একাডেমী আয়োজিত চলমান রাজনীতি বিষয়ক এক আলোচনা সভায় বিএনপিকে উদ্দেশে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, এই কথাটা কি ঠিক? এর চেয়ে সত্যের অপলাপ কিছু হতে পারে না। এর চেয়ে নিলর্জ মিথ্যা আর কিছু হতে পারে না। রাজনীতিতে ভুল করে ভুল স্বীকার করলে তাতে কোন লজ্জা নেই। বরং এতে আরও রাজনীতি সমৃদ্ধ হয়
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, বিএনপি ভারতবিরোধী একটি রাজনৈতিক দল । দলের নেতাদের বক্তৃতা ও কথাবার্তায় এ কথা স্পষ্ট।সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সম্প্রতি বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বিএনপি কখনো ভারত বিরোধিতা করেনি, বর্তমানেও করে না এবং ভবিষ্যতেও করবে না। তার এমন বক্তব্যের মাধ্যমে বোঝা যায়- তারা অতীতে যেমন ভারত বিরোধিতা করেছে, এখনও করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।
বিএনপির ভারতকে বিরোধিতা না করার দাবী চরম মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়-একথা উল্লেখ করে সুরঞ্জিত বলেন, বিএনপি তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পাকিস্তানী দর্শন অনুসরণ করেছে। এটাই মুল সত্য। বঙ্গবন্ধু একাডেমীর উপদেষ্টা ডা. খন্দকার এমদাদুল হক সেলিমের সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাম্যবাদী দলের ঢাকা মহানগরের সভাপতি হারুন চৌধুরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক আহবায়ক মিনহাজ্ব উদ্দিন মিন্টু এবং বঙ্গবন্ধু একাডেমীর মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ।দেশের বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত বলেন, বিএনপি ভারত বিরোধিতা করে নি, একথা বললে সেটা হবে প্রতারণা।দেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই-এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি জিয়াউর রহমান না তারেক রহমানের দর্শন অনুসরণ করে সে বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি দু’জনের আদর্শকেই বর্জনীয় বলে উল্লেখ করেন।
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর পর সেদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রেরণা ও আশা-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিকট প্রতিবেশী দলের বাংলাদেশ সফর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক হয়ে থাকবে। আর বিএনপির ভারতকে বিরোধিতা না করার ঘোষণাও দেশের রাজনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন বলে বিবেচিত হবে।তিনি আরো বলেন, যারা ভারতবিরোধী রাজনীতি করেছে তারা তাদের ভুল স্বীকার করে তাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।সুরঞ্জিত বলেন, তিস্তার পানি বন্টনের চুক্তি না হলেই যে নরেন্দ্র মোদীর সফর সফল হবে না তা বলা যাবে না। কেননা ভারত একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় দেশ। কেন্দ্রীয় সরকারকে যে কোন চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য প্রাদেশিক সরকারের অনুমতি নিতে হয়।এ বিষয়ে তিনি বলেন, তিস্তা নদীর পানি বন্টন বিষয়ে চুক্তি হতেই হবে। এ চুক্তির কোন বিকল্প নেই। আমরা আমাদের দাবী থেকে সরব না।
বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার মধেও এসএসসি পরীক্ষা সম্পন্ন করে ফলাফল প্রকাশিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সুরঞ্জিত বলেন, রাজনীতিতে ভুল করে ভুল স্বীকার করার মধ্যে কোন লজ্জা নেই। বিএনপি জামায়াতকে এ সত্য উপলদ্ধি করতে হবে।আগামী বাজেট সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড হলো কৃষক। তাদের বাঁচাতে হবে। তারা যেন তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায় তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।