দৈনিকবার্তা-রাজশাহী, ১ জুন: রাজশাহীর বাঘা উপজেলা বাসস্ট্যান্ডে বাস ও সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সোমবার (১ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি বাস ও সিএনজি ভাঙচুর করা হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছোঁড়ে। রাবার বুলেট ও ইটপাটকেলের আঘাতে উভয় পক্ষের ছয় জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের পর থেকে বাঘা-রাজশাহী রুটে বাস ও সিএনজি চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সমঝোতার জন্য উভয় পক্ষকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে।
শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে রাজশাহীর সহকারী পুলিশ সুপার (পুঠিয়া সদর সার্কেল) আসলাম হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। সংঘর্ষে আহতরা হলেন- সিনজি চালক মোহাম্মদ রবি (২৮), আরিফ হোসেন (২৫) ও আবু সাঈদ (৩০) এবং বাস শ্রমিক রনজু (২৫), নুরুজ্জামান (৩৮) ও রফিকুল ইসলাম (৩০)। এর মধ্যে রবি, রনজু ও নুরুজ্জামনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আরিফকে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। অপর দু’জনকে প্রথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাঘা সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি মিলন আলী জানান, বাস শ্রমিকরা দীর্ঘ দিন থেকে বাঘা-চারঘাট ও রাজশাহী রুটে সিএনজি চালাতে বাধা দিয়ে আসছে। এর আগে, গত মাসে এ রুটে বিআরটিসি’র দ্বিতল বাস চলাচল উদ্বোধন করা হলে তারা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয়। এভাবে তারা সিএনজিও চালাতে দিচ্ছে না। এ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে স্থানীয় প্রশাসন পাঁচ দিনের মধ্যে বসে একটি সমাধান করে দেবেন বলে বাস শ্রমিকদের দাবিতে এ রুটে সিএনজি চলাচল বন্ধ করেন।
মিলন আলী জানান, পাঁচ দিন পার হওয়ার পরও কোনো সমাধান না হওয়ায় সোমবার বাঘা বাসস্ট্যান্ডের ১০০ গজ পশ্চিমে থাকা তাদের স্ট্যান্ডে সিএনজি সারি করে রাখেন। কিন্তু বিনা উস্কানিতে বাস শ্রমিকরা আকস্মিকভাবে তাদের ওপর হামলা চালায়। পরে তারাও পাল্টা আক্রমণ করে। এ সময় বাস শ্রমিকরা স্ট্যান্ডে থাকা ২০-২৫টি সিএনজি ভাঙচুর চালায় বলে দাবি করেন সমিতির এ নেতা। তবে, বাঘা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রাব্বানী কাছে দাবি করেন, নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও তারা এ রুটে সিএনজি চালাতে উদ্ধত হলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় সিএনজি শ্রমিকরা ছয়টি বাস ভাঙচুর করলে প্রতিরোধে বাস শ্রমিকরাও হামলা চালায়। বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুর এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়। পুলিশ রাবার বুলেট ছুঁড়ে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ওসি আরও জানান, সংঘর্ষের পর বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। এছাড়া গুরুতর আহতদের রামেকে পাঠানো হয়েছে।