দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ৩১ মে: গাজীপুরের শ্রীপুরে রবিবার দুপুরে এক পোশাক কারখানায় ভয়াবহ আগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘন্টা চেষ্টার পরও সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে ঢাকা, জয়দেবপুর, শ্রীপুর, এবং ময়মনসিংহের ভালুকা ফায়ার সার্ভিসের চৌদ্দটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস সূত্র ও কারখানার শ্রমিকরা জানায়, রবিবার দুপুরে খাবারের বিরতির সময় শ্রীপুর উপজেলার বেতজুরী এলাকাস্থিত ডিগনিটি টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড কারখানায় আগুনের সূত্রাপাত হয়। এসময় খাবারের বিরতি থাকায় প্রায় সকল শ্রমিক ও কর্মকর্তারা কারখানা ভবনের বাইরে ছিলেন।
এ কারখানায় প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কাজ করে। কারখানায় বিভিন্ন ধাপে সুতা থেকে ‘টি শার্ট’ তৈরী করা হয়। দুপুর পৌণে ২টার দিকে স্টিলের কাঠামোর উপর নির্মিত বিশাল আকৃতির ৭ তলা বিশিষ্ট ওই কারখানা ভবনের তৃতীয় তলার গোডাউনে আগুনের সূত্রাপাত হয় এবং পুরো ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভবনের দক্ষিণ পাশের জানালা দিয়ে ধোঁয়া বের হতে দেখে কারখানার কর্মচারীরা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মুহুর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা কারখানার ৭ তলা ওই ভবনের ৫ম তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। খবর পেয়ে ঢাকা, জয়দেবপুর, শ্রীপুর, এবং ময়মনসিংহের ভালুকাসহ ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন ষ্টেশনের চৌদ্দটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘন্টা চেষ্টার পরও সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। নিয়ন্ত্রণে আসতে না পারায় আগুন ভবনের উপরের তলায়ও ছড়িয়ে পড়ছে। স্টিলের ফ্রেমের ভবন হওয়ার কারনে উপরের তলাগুলোতে পানি আটকে রাখা যাচ্ছেনা। সরবরাহ করা পানি গড়িয়ে নীচে পড়ে যাচ্ছে। কারখানা ভবনে পর্যাপ্ত দরজা জানালা না থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে ভবনের ভিতরে ঠিকমতো পানি সরবরাহ করতে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিলম্ব হচ্ছে। ইতোমধ্যে আগুনের উত্তাপে ভবনের ষ্টিলের ফ্রেম দুর্বল হয়ে পড়েছে। শীঘ্রই আগুন নিয়ন্ত্রণে না এলে ষ্টিলের ফ্রেম দুর্বল হয়ে যে কোন সময় ভবনটি বসে পড়ে ধ্বংস স্তুপে পরিনত হতে পারে বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আশংকা করছেন। তাৎক্ষণিকভাবে অগ্নিকান্ডের কারণ ও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
কারখানার প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক নাজমুন্নাহার কেমু জানান, আগুন এখনো জ্বলছে। আগুনে তৈরী পোশাকসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে।গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান লিটন জানান, স্টিলের ফ্রেমের ভবন হওয়ার কারনে উপরের তলাগুলোতে যেখানে আগুন রয়েছে সেখানে পানি আটকে রাখা যাচ্ছেনা। সরবরাহ করা পানি গড়িয়ে নীচে পড়ে যাচ্ছে। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিলম্ব হচ্ছে। আগুনের খবর পেয়ে প্রথমে শ্রীপুরের মাওনা ও গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুণ নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। পরে গাজীপুর, টঙ্গী, ভালুকা ও সাভার ইপিজেডসহ মোট ১৪টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য একযোগে কাজ করছে। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্নয় করা সম্ভব হয়নি। তবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রাপাত হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।