DoinikBarta_দৈনিকবার্তা_1426343177

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩০ মে:  তৃতীয় কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট সার্জারি (অ¯ো¿পচারের মাধ্যমে শ্রবণযন্ত্র স্থাপন) বিষয়ক কর্মশালা শনিবার থেকে শুরু হয়েছে।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যায়ের শহীদ ডা. মিলন হলে সমাজ কল্যাণ সচিব তারিক-উল-ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন।ডেভেলপমেন্ট অব কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট প্রোগ্রাম ইন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (২য় পর্যায়)-এর উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কর্মসূচির ব্যবস্থাপনা ও বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল’র প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক আবু সফি আহমেদ আমিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডেভেলপমেন্ট অব কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট প্রোগ্রাম ইন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (২য় পর্যায়ে)’র কর্মসূচী পরিচালক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় নাক কান ও গলা বিভাগের চেয়ারম্যান, অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল হাসনাত জোয়ারদার।নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. নাসিমা আখতার অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কক্লিয়ার ইমপ্লান্টের উপর বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ও ইমপ্ল্যাল্ট সার্জন, নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. জহিরুল হক সাচ্চু। এছাড়া বিদেশ থেকে আগত চিকিৎসকবৃন্দ, কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট গ্রহীতা ও অভিভাবকগণ বক্তব্য রাখেন।কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট সার্জারির মাধ্যমে বধির ও কানে একবারেই কম শোনা রোগীর অস্ত্রপচারের মাধ্যমে শ্রবণযন্ত্র স্থাপন করে শোনার ব্যবস্থা করা হয়। এটি একটি ব্যয়বহুল চিকিৎসা। বিদেশে এ চিকিৎসা করাতে একজন রোগীর অর্ধকোটি টাকারও বেশি ব্যয় হয়। আমাদের এখানেও এ চিকিৎসা করাতে ১০ থেকে ১৬ লাখ টাকার মত ব্যয় হয়। কিন্তু কর্মশালার মাধ্যমে নামমাত্র মূল্যে এ চিকিৎসা প্রদান করা হবে।

ডেভেলপমেন্ট অব কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট প্রোগ্রাম ইন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (২য় পর্যায়)-এর এ উদ্যোগে মোট ৭২ জনকে এ চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হবে। প্রত্যেক বছর ৩৬ জন রোগীকে এ চিকিৎসা দেয়া হবে। রোগী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে শিশুদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে। ২০১৬ সালের জুন মাসে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। এর আগের প্রকল্পে ৫৪ জনকে এ সেবা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০ থেকে ১৬ লাখ টাকার ব্যয়বহুল এ চিকিৎসাসেবা ৪৮ জনকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। ৬ জনকে নামমাত্র মূল্যে শ্রবণযন্ত্রের ডিভাইস স্থাপন করে দেয়া হয়। এছাড়া আরো ১২ জন রোগী নিজ খরচে ডিভাইস ক্রয় করে দিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে তাদেরও এ চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়।

প্রধান অতিথি সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব তারিক-উল-ইসলাম তাঁর বক্তব্যে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শ্রবণ প্রতিবন্ধীসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসাসেবা কর্মে সবরকমের সহযোগিতার করার জন্য আন্তরিক আশ্বাস প্রদান করেন।সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সবসময়ই অত্যন্ত আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টাতেই বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ঈর্ষনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। অটিস্টিক শিশুদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কন্যা ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন অটিজম বিশেষজ্ঞ ও ন্যাশনাল এডভাইজরি কমিটি অন অটিজম এন্ড নিউরো-ডেভলপমেন্টাল ডিসঅর্জার-এর চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে বিস্ময়কর অবদান রেখে চলছেন।

এদিকে শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)’র ই-ব্লকের ইন্সটিটিউট অফ প্যাডিয়াট্রিক নিউরো ডিসঅর্ডার্স এন্ড অটিজম (ইপনা)’র সেমিনার রুমে সকাল ১০টায় অটিস্টিক শিশুদের বাবা-মায়েদের সচেতনতা এবং বাসায় অটিস্টিক শিশুদের উন্নতির জন্য তাদের সঙ্গে কাজ করার অংশ হিসেবে ‘আরলি ইন্টারভেনশন এন্ড হোম ম্যানেজমেন্ট ফর দ্যা প্যারেন্টস অফ চিলড্রেন উইথ অটিজম’ বিষয়ক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরো-ডিজঅর্ডার এন্ড অটিজম (ইপনা) কর্তৃক এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অটিস্টিক শিশুদের বাবা-মায়েদের সচেতনতা এবং তাদের সঙ্গে বিজ্ঞান-সম্মতভাবে কাজ করার পদ্ধতি শেখানো হয়। সেই সঙ্গে বাবা-মায়েদের স্ট্রেস ম্যানেজম্যান্টের বিভিন্ন পদ্ধতিও শেখানো হয়।প্রশিক্ষণে অটিস্টিক শিশুদের অভিভাবক, শিশু নিউরোলজিস্ট, অটিজম ইন্সট্রাকটর ও শিক্ষক, শিক্ষা-মনোবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী, ডেভেলপমেন্টাল থেরাপিস্টসহ ইপনার আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় অটিস্টিক শিশুদের বাবা-মায়েদের মাঝে প্রশিক্ষণ উপকরণ বিতরণ করা হয়।