দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ৩০ মে: বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বারি) ‘কৃষি যন্ত্রপাতি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারন প্রকল্পের’ সমাপনী কর্মশালা শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গাজীপুরস্থিত বারি’র এফএমপি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সেমিনার কক্ষে সকালে ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলাম মন্ডল এর সভাপতিত্বে সমাপনী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যামল কান্তি ঘোষ।
কর্মশালায় বক্তব্যদানকালে শ্যামল কান্তি ঘোষ বলেন, আয়তনের তুলনায় আমাদের দেশে লোক সংখ্যা অনেক বেশী। আমাদের দেশে আবাদি জমির পরিমান কম। আমাদের সীমিত জমি ও স¤পদের মাঝে এতো মানুষকে বাঁচাতে ও তাদের মুখে খাবার তুলে দিতে গবেষণার কোন বিকল্প নেই। এ জন্য আমাদের বিজ্ঞানীদের এগিয়ে এসে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। তিনি কৃষি বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কৃষকের মুখে হাসি ফোটান তাহলেই কৃষকের হাসির মাঝে আপনার সাফল্য ও আনন্দ খুজে পাবেন। যাদের জন্য আপনার কাজ করছেন, তারা কি পেল সেটা নিয়ে ভাবেন এবং তাদেরকে সঠিক পথ দেখান তাহলে দেশ খাদ্যে আরোও উন্নত হবে।
‘বারি’ আয়োজিত এ সমাপনী কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (গবেষণা) ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দীন, পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ উইং) ড. ভাগ্য রাণী বণিক ও পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) ড. মো. রওশন আলী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফএমটিডি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শোয়েব হাসান। এ ছাড়া সমাপনী কর্মশালায় ইন্সটিটিউটের বিভাগীয় প্রধানগণ, উর্ধ্বতন বিজ্ঞানীবৃন্দ ও প্রাক্তন মহাপরিচালকবৃন্দ এবং বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানীবৃন্দ উপ¯িহত ছিলেন। এর আগে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন গবেষণাগার পরিদর্শন করেন।
আয়োজকরা জানান, ‘কৃষি যন্ত্রপাতি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারন প্রকল্প’টি ২০১০ সালে কার্যক্রম শুরু করে। এটি একটি ব্যাতিক্রম ধরনের পাইলট প্রকল্প। বর্তমানে কৃষি বান্ধব সরকারের এই প্রকল্পটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে কৃষি যন্ত্রপাতি ভর্তুকি কার্যক্রম একটি উল্ল্যেখযোগ্য কার্যক্রম। কৃষি যন্ত্রপাতি ভর্তুকি প্রদান এর ফলে কৃষি কাজে যেমন গতি বৃদ্ধি পেয়েছে, উৎপাদন ব্যয় হৃাস পাচ্ছে, কৃষি শ্রমিক সংকট কমে আসছে।
প্রকল্পের আওতায় মোট ৩১০৭টি যন্ত্রে মোট ৩০৬.৩ লক্ষ টাকা ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে যা বাংলাদেশর ইতিহাসে বিরল মাইল ফলক। এসব কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ইতেমধ্যে প্রকল্প এলাকার কৃষক গণ প্রতি বছর সরাসরি প্রায় ৭৫ কোটি টাকার আর্থিক সুবিধা লাভ করেছেন। এছাড়াও প্রকল্পের গবেষণা কার্যক্রমের আওতায় ১০টি নতুন কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন করা হয়েছে যা এখন মাঠ পর্যায়ে কৃষকরা ব্যবহার করছে। প্রকল্পের আওতায় মোট ৬৬০টি কৃষি যন্ত্রপাতি মাঠ প্রদর্শনী, ২৬৭টি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মোট ৩১ হাজার ৮১০ জন কৃষককে সরাসরি কৃষি যন্ত্রপাতি কার্যকারিতা সর্ম্পকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে কৃষকরা কৃষি যন্ত্রপাতি সম্পর্কে সরাসরি জ্ঞান আহরণ এবং কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারে উদ্ভুদ্ধ হবে। এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় ৩ জন কর্মকর্তা কৃষি যন্ত্রপাতির উপর এমএস কোর্স সম্পন্ন করেছেন, ৩০ জন এসএসও/এসও কে রিচার্স মেথডলজি, ৪০ জন অফিস স্টাফকে অফিস ও আর্থিক ব্যবপস্থাপনা ও ৪০ জন মেকানিককে কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।