দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৯ মে: বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। শুকবার বিকেলে শিলংয়ের জেলা জজ কোর্টের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সালাহ উদ্দিনের আইনজীবী এসপি মোহন্ত।এর আগে সালাহ উদ্দিনকে জেরা করে মেঘালয় পুলিশ। শিগগির তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও দেয়া হবে। তার বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্ট লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। ইস্ট খাসি হিলস জেলা পুলিশ সুপার এম খারক্রাঙ সংবাদিকদের বলেন, আমরা জেরা শেষ করেছি। আশা করছি দ্রুত চার্জশিট জমা দিতে পারবো। তবে জেরায় কি তথ্য পাওয়া গেছে তা জানাতে রাজি হননি পুলিশের এ কমকর্তা।এদিকে দুই মাস নিখোঁজ থাকার পর ১১ মে ভারতের শিলংয়ে উদভ্রান্ত অবস্থায় সালাহ উদ্দিন আহমেদের খোঁজ পাওয়া যায়। তাকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় নেগ্রিমস হাসপাতালে।
গত বুধবার সালাহ উদ্দিন আহমদকে আদালতে তোলা হলে আদালত তাকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠায়।এর পরই তিনি আবার অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে আবার হাসপাতালে পাঠানো হয়।জানা গেছে, সালাহ উদ্দিন আহমেদ বুকের ব্যথার পাশাপাশি নতুন করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।গত ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরার একটি বাড়ি থেকে সালাহ উদ্দিনকে তুলে নেয়া হয় বলে তার পরিবার দাবি করে আসছে।হাসপাতালে সালাহ উদ্দিন তার স্ত্রীকে জানান, তিনি স্বেচ্ছায় ভারতে ঢোকেননি। চোখ-হাত বেঁধে তাকে শিলংয়ে ফেলে দিয়ে যাওয়া হয়েছিল।বিএনপির নেতা সালাহ উদ্দিন আহমদের জামিন আবেদনের শুনানি আজ শুক্রবার বিকেলে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের একটি আদালতে শেষ হয়। সালাহ উদ্দিন আহমদের জামিন চেয়ে তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমদের করা আবেদনের শুনানি হয় স্থানীয় জেলা আদালতে। ২২ মে উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি এ আবেদন জানান। সরকারপক্ষের কৌঁসুলি জামিনের বিরোধিতা করেন। তবে বিচারক মামলার নথি আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন।
আইনি হেফাজতে নেওয়ার পর আজ তৃতীয় দিনের মতো মেঘালয়ের শিলংয়ের নেগ্রিমস হাসপাতালে রয়েছেন বিএনপির নেতা সালাহ উদ্দিন আহমদ। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় নেগ্রিমসের চিকিৎসকেরা তাঁকে হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। নেগ্রিমসের (নর্থ ইস্টার্ন ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস) পরিচালক এ জে এহেনগার ও সালাহ উদ্দিন আহমদের আইনজীবী এস পি মাহান্তা শিলং থেকে মোবাইল ফোনে এ তথ্য জানান।এ জে এহেনগার জানান, বুকের ব্যথার পাশাপাশি ডায়রিয়ায় ভুগছেন সালাহ উদ্দিন আহমদ। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত তাঁর জন্য গঠিত চিকিৎসকদের বোর্ড তাঁকে হাসপাতালে রাখতে চাইছে।
শিলংয়ের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম লিংদো নংব্রি গত বুধবার দুপুরে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিনকে দুই সপ্তাহের জন্য আইনি হেফাজতে (কারাগারে) পাঠানোর নির্দেশ দেন। দুই সপ্তাহ পর শুনানির জন্য তাঁকে আবার আদালতে হাজির করতে বলা হয়। তবে আদালতে হাজিরের পর সালাহ উদ্দিন বুকে ব্যথা অনুভবের বিষয়টি উল্লেখ করায় তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তাঁর শুশ্রূষার নির্দেশ দেন আদালত। এরপর কারাগারে পাঠানোর ছয় ঘণ্টার মাথায় বুধবার রাতে তাঁকে আবার নেগ্রিমসে পাঠানো হয়।১১ মে ভোরে সালাহ উদ্দিন আহমদকে উদ্ভ্রান্ত অবস্থায় ঘুরতে দেখে শিলংয়ের গলফ-লিংক এলাকার লোকজন পুলিশে খবর দেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে পাস্তুর পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। তাঁর প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয় সেখানকার সিভিল হাসপাতালে। শিলং সদর থানা হয়ে নেওয়া হয় মানসিক হাসপাতাল মিমহানসে। এক দিন পর মিমহানস থেকে আবার তাঁকে পাঠানো হয় সিভিল হাসপাতালে। ২০ মে সিভিল হাসপাতাল থেকে নেগ্রিমসে নেওয়া হয়। নেগ্রিমস হাসপাতালের চিকিৎসকদের ছাড়পত্র পাওয়ার পর পুলিশ মঙ্গলবার বিএনপির এই নেতাকে শিলং সদর থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।