দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৮ মে: রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে অভিযোগপত্র গ্রহণের বিষয়ে আদেশের জন্য ২৮ জুন দিন ধার্য করেছেন আদালত৷বৃহস্পতিবার চার্জশিট উত্থাপনের পর এ আদেশ দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শামসুল আরেফিনের আদালত৷ অভিযোগপত্র গ্রহণের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য ছিল৷ মামলায় খালেদা জিয়াকে পলাতক দেখান হয়েছে৷ অভিযুক্ত ৩৮ জনের মধ্যে সাতজন কারাগারে রয়েছেন৷ এছাড়া বিএনপিকর্মী বাবুল সরদার বৃহস্পতিবার আত্মসমর্পণ করেছেন৷গত ৬ মে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) বশির উদ্দিন ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন৷মামলায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে৷ এতে খালেদা জিয়াসহ ৩১ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে৷ রুহুল কবির রিজভীসহ সাতজন জেলহাজতে রয়েছেন৷ আদালতে বেগম খালেদা জিয়াসহ পলাতক ৩১ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়৷ আর সাক্ষী করা হয় ৮১ জনকে৷
চার্জশিটে উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বরকত উল্লাহ বুলু, আমান উল্লাহ আমান, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, শওকত মাহমুদ, বিশেষ সহকারী শামসুল ইসলাম শিমুল বিশ্বাস, প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান, মীর আবু জাফর শামসুদ্দিন দিদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, বিএনপির ঢাকা মহানগরের সদস্য সচিব হাবিবুন্নবী খান সোহেল, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুল বারী হেলাল, সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন আহমেদ, তার ছেলে তানভীর ওরফে রবিন, নবীউল্লাহ নবী, কাইয়ূম কমিশনার, লতিফ কমিশনার এবং পেশাজীবী দলের নেতা সেলিম ভূঁইয়া৷২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করা হয়৷ এতে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন৷ তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলে ১ ফেব্রুয়ারি চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম (৬০) নামে এক যাত্রী৷ওই ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি বিকেলে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কে এম নুরুজ্জামান৷ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫/২৫(ঘ) ধারায় দায়ের করা মামলায় পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিএনপির ১৮ নেতার নাম উল্লেখ করা হয়৷ এ ছাড়া পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী হিসেবে যাত্রাবাড়ী বিএনপির ৫০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়৷ গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সোহাগ ও লিটন নামে দু’জন গত ১৯ ফেব্রুয়ারি নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন৷
খালেদার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল৷ এর মধ্যে একটি মামলায় গত ৫ মে ঢাকার সিএমএম আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই বশির আহমেদ৷ ১৯ মে বিশেষ ক্ষমতা আইনের অপর মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের অপর এসআই জাহিদুল ইসলাম৷খালেদা জিয়াকে চার্জশিট তিনটিতে প্রধান আসামি করা হয়েছে৷ ৮১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে৷অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় এজাহারভুক্ত অপর ৪২ আসামিকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন জানানো হয়েছে৷
আসামিদের মধ্যে বর্তমানে ৭ জন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন৷ খালেদা জিয়াসহ বাকি ৩১ জনকে পলাতক দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাওয়া হয়েছে চার্জশিটে৷গত ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা ছোড়া হলে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন৷ দগ্ধদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলে ১ ফেব্রুয়ারি চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম (৬০) নামক এক বৃদ্ধ যাত্রী৷এ ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি বিকেলে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন থানার উপ-পরিদর্শক কে এম নুরুজ্জামান৷ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫/২৫(ঘ) ধারায় দায়ের করা হয় আরও একটি মামলা৷ মামলা দু’টিতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিএনপির ১৮ নেতার নাম উল্লেখ করা হয়৷ এছাড়া পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী হিসেবে যাত্রাবাড়ী বিএনপির ৫০ নেতাকর্মীসহ মোট ৮০ জনকে মামলার আসামি করা হয়৷ গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সোহাগ ও লিটন নামে দু’জন গত ১৯ ফেব্রুয়ারি নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন৷ জবানবন্দিতে কারা কারা জড়িত, পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে৷