দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৭ মে: প্রচণ্ড দাবদাহে ভারতজুড়ে গত কয়েক দিনে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে৷ কোনো কোনো এলাকায় তাপমাত্রা পৌঁছে গেছে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি৷ দেশটিতে চলমান দাবদাহে বেশিরভাগ প্রাণহানি ঘটেছে দক্ষিণাঞ্চলীয় দুই রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশ ও তেলেঙ্গানায়৷গত সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত রাজ্য দুটিতে ১১১৮ জন মারা গেছেন৷ এর মধ্যে গত ১৩ মে থেকে বয়ে যাওয়া দাবদাহে অন্ধ্র প্রদেশে আট শতাধিক এবং তেলেঙ্গানায় দুই শতাধিক মানুষ মারা গেছেন৷তবে বেশিরভাগ প্রাণহানি গত ৫ দিনে হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা৷এছাড়া উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গে গরমে ৩৬ জনের মৃতৃ্য হয়েছে৷আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনে দেশটির কোনো কোনো অংশে তাপমাত্রা কমতে পারে৷দাবদাহের পরিপ্রেক্ষিতে লোকজনকে ঘরে থাকার পরামর্শের পাশাপাশি প্রচুর পানি পানের পরামর্শ দেয়া হয়েছে৷
বিবিসি বলছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্র প্রদেশে দাবদাহে সবচে বেশি মানুষের মৃতু্য হয়েছে৷ গেল সপ্তা থেকে এ পর্যন্ত ওই অঞ্চল দুটিতে অন্ততপক্ষে ১১১৮ জনের মৃতু্য হয়েছে বলে জানা গেছে৷বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গেছে, দাবদাহে পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যায় অন্ততপক্ষে ২৪ জনের মৃতু্য হয়েছে৷তবে কয়েকদিনের মধ্যেই কোনো কোনো এলাকায় গরমের তীব্রতা কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে৷হাসপাতালগুলো হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে৷এরআগে অসহনীয় গরমে তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্র প্রদেশে নতুন করে আরো ৯০ জনের মৃতু্য নিয়ে মৃতের সংখ্যা ৮শ’ ছাড়িয়েছে বলে জানানো হয়েছিল৷ সোমবার তেলেঙ্গানা রাজ্যের হানামকন্দা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়৷রাজ্যটির অধিকাংশ এলাকায় তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি ৷অন্ধ্র প্রদেশের তিন জেলা কাকিনাদা, মাচিলিপাতনাম ও তুনিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ডকরা হয়৷
ওদিকে, বিবিসি’র খবর অনুযায়ী, উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করাহয়েছে৷ রাজধানী দিলি্লর তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে৷কর্তৃপক্ষ জনগণকে ঘরের ভেতরে অবস্থান করাসহ প্রচুর তরল পান করার পরামর্শ দিয়েছে৷এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকেই তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্র প্রদেশে দাবদাহ শুরু হয়৷ কিন্তু গেল এক সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃতু্য হয়েছে৷অন্ধ্র প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পি. তুলসি রানি বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা সরাসরিপ্রখর রোদের সংস্পর্শে এসেছে তারা দাবদাহের শিকার হয়েছে৷ এছাড়া, ৫০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তিএবং যারা দিনমজুর তারা দাবদাহে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন৷আমরা জনগণকে সুরক্ষা ব্যবস্থা যেমন: ছাতা ও টুপি ব্যবহার করা, প্রচুর পরিমাণ পানি ও তরল পান করা এবং সুতি কাপড় পরার পরামর্শ দিয়েছি৷বৃষ্টি কম হওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর ৷