দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ২৫ মে: বাংলাদেশে অবস্থানরত গ্রেফতারকৃত পাকিস্তানী নাগরিক খালিদ মেহমুদ নিজেকে পাকিস্তানের সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র চর বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশের কাছে খালিদ ওই স্বীকারোক্তি দেন বলে জানান গাজীপুরের পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশিদ। রবিবার রাতে শ্রীপুরের এক কারখানা থেকে তাকে আটক করা হয়। খালিদ পাকিস্তানের ফয়সলাবাদ মিল্লাত টাউনের ২৬০/বি-এর বাসিন্দা মো. আরশেদ-এর ছেলে। তার পাকিস্তানী নাগরিকত্ব আইডি নং-৬১১০১-১৭৬৭৭২৪-৩, পাসপোর্ট নং-ইএফ ০১৫৭২৪২।
সোমবার অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল রবিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার ভাংনাহাটি এলাকার ইউনিলায়েন্স টেক্সটাইল কারখানায় অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানের নাগরিক খালিদ মেহমুদকে (৫০) আটক করে। সে পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েই তাকে আটক করা হয়েছে। সে কী কারণে আত্মগোপন করে ছিল, তা বের করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৭নবেম্বর থেকে তিনমাস মেয়াদি ‘ই’ টাইপ ভিসা নিয়ে খালিদ বাংলাদেশে আসে। এরপর সে পরিচায় গোপন করে ওই কারখানায় ১৯ নবেম্বর তিনি শ্রীপুরের ইউনিলায়েন্স টেক্সটাইল কারখানায় ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি নেন। পরে চলতি বছর তার ভিসার মেয়াদ দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ বাড়ায়। কিন্তু ৬মে তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তিনি এ দেশেই অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। গাজীপুরে তার অবস্থানের খবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ হেড কোয়ার্টার ও গোয়েন্দা সংস্থায়ও ছিল। কিন্ত তিনি কোথায় অবস্থান করছিলেন আগে তা জানা যায়নি। তাকে অনেকদিন ধরেই খোঁজা হচ্ছিল। পরে গোপনসংবাদের ভিত্তিতে তাকে ওই কারখানা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গাজীপুরে অবস্থান করে আইএসআই’র এজেন্ট হিসেবে তার বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে পৃষ্ঠ পোষকতার মাধ্যমে গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিতিশিলতা সৃষ্টি ও স্বর্ণ চোরাচালানসহ বাংলাদেশ বিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িত থাকার তথ্য রয়েছে।
গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আমির হোসেন জানান, খালিদ মেহমুদ আগে পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে কর্মরত থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বেইজ স্থাপনা ও রাডার টেকনোলজির উপর উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ২০০১সালে বিমানবাহিনী থেকে অবসরে যান। পরবর্তীতে তিনি আইএসআই-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ হওয়া পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহারের সঙ্গেও খালিদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।